এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতেই ভগবানগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন লগ্নজিতা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশাহ হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে।
অভিযুক্তের নাম মেহবুব মল্লিক। তিনি ভগবানপুর এলাকার বেলুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার লগ্নজিতা যে স্কুলের অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি সেই স্কুলেরই অন্যতম মালিক। গায়িকা জানিয়েছেন, এদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে সব ঠিকঠাক চলছিল। প্রথম তিনটি গানের পর কর্তৃপক্ষের তরফে লগ্নজিতাকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। ৭টা ৪৫ মিনিটে তিনি সপ্তম গান গাওয়া শেষ করেন।
তালিকার অষ্টম গানে যাওয়ার আগে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন লগ্নজিতা। সেই সময় দর্শকআসন থেকে মেহবুব মঞ্চে উঠে এসে তাঁকে মারধর করতে উদ্যত হন এবং কটূক্তি করেন। গায়িকার অভিযোগ, ‘জাগো মা’ গানটি গাওয়ার জন্যই তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। মেহবুবের বক্তব্য ছিল, ধর্মনিরপেক্ষ গান গাইতে হবে। এসব গান চলবে না। এই ঘটনার পর লগ্নজিতা আর গান গাননি। রাতেই তিনি ভগবানপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত মেহবুবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় বিজেপির অভিযোগ, লগ্নজিতাকে দীর্ঘক্ষণ ভগবানপুর থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টাও করা হয়েছে। জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে জানিয়েছেন, শনিবারের অনুষ্ঠানের পুলিশের অনুমতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুমতি থাকলে অনুষ্ঠানের সময় স্কুলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল কি না তা–ও দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না বলেও জানান তিনি।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশাহ হকের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার। তিনি জানান, এসডিপিও স্তরের কোনও আধিকারিক এই ঘটনার তদন্ত করছেন। এসপি–র কথায়, ‘সব অভিযোগই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে দেখা হবে। এই ধরণের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে তা-ও আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’