বাংলাদেশি সন্দেহে দলিতকে পিটিয়ে খুন, কেরল সরকারের নিশানায় গেরুয়া শিবির
বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
তিরুবন্তপুরম: ছত্তিশগড়ের পরিযায়ী শ্রমিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কেরল। এধরনের নৃশংতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। সোমবার এই ঘটনায় আরএসএস ও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেরলের মন্ত্রী এমবি রাজেশ। তিনি বলেন, ‘এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করি। গোটা দেশে ঘৃণার রাজনীতি ছড়াচ্ছে সংঘ পরিবার। নিহত পরিযায়ী শ্রমিক সেই রাজনীতির শিকার হয়েছেন।’ তিনি আরও জানান, ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম অনু, প্রসাদ, মুরলী, আনন্দন ও বিপিন। শুক্রবার তাদের বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন স্থানীয় আদালতের বিচারক। রাজেশ জানান, ধৃতদের মধ্যে চারজন আরএসএস কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে এক সিপিএম নেতাকে খুনের চেষ্টা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে কেরল সরকার। নেতৃত্বে রয়েছেন পালাক্কড়ের এসপি।
বুধবার চুরির অভিযোগে রামনারায়ণ নামে ওই দলিত শ্রমিককে পাল্লাকড়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ, মারধরের সময়ে তাঁকে বাংলাদেশি আখ্যা দেওয়া হয়। জাত তুলে গালিগালাজের পাশাপাশি রামনারায়ণের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায় অভিযুক্তরা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, নিহত যুবকের শরীরের ৪০টি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মাটিতে ফেলার পর লাঠি দিয়ে রামনারায়ণের উপর চড়াও হয় প্রসাদ ও তার সঙ্গীরা। মুখে ও পিঠে লাথি মারা হয়। মারধরের জেরে পাঁজর ও শিরদাঁড়া ভেঙে যায়। এমনকী মৃত্যুর পরেও অত্যাচার থামেনি। রামনারায়ণের দেহের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন চিকিৎসক হিতেশ শংকর। তাঁর কথায়, ‘এর আগে ১০ হাজারের বেশি ময়নাতদন্ত করেছি। কিন্তু দেহে এমন অমানবিক নৃশংসতার ছাপ কখনও দেখিনি।’ রামনারায়ণের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেন, ‘এই ধরণের কাজ প্রগতিশীল সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’