নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে নির্বাচনি বন্ড। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’বছর। কিন্তু বিজেপির সিন্দুকে কোনও প্রভাব পড়েনি। বরং বিভিন্ন অনুদানে আরও ফুলেফেঁপে উঠছে গেরুয়া শিবিরের তহবিল। আগেই জানা গিয়েছে, নির্বাচনি ট্রাস্টের মাধ্যমে চাঁদার ৮২ শতাংশ ঢুকেছে বিজেপির ঘরে। এবার জানা গেল, বন্ড বাতিলের পর লোকসভা নির্বাচনের বছরে নরেন্দ্র মোদির দলের প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণএকলাফে বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবর্ষের তুলনায় ২ হাজার কোটি টাকা বেশি। নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপির পেশ করা অনুদানের রিপোর্ট থেকে সামনে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিজেপি যেখানে অনুদানের জোয়ারে ভাসছে, সেখানে বিরোধী দলগুলির ভাঁড়ারে ভাটার টান। বিজেপি ওই দলগুলির তুলনায় সাড়ে চার গুণ বেশি টাকা পেয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে কংগ্রেস সহ ডজনখানেক বিরোধী দলের ঝুলিতে এসেছে সবমিলিয়ে মোট ১ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা অনুদান। কংগ্রেস ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা পেয়েছিল। লোকসভা ভোটের বছরে সেই অঙ্ক ৪৩ শতাংশ কমে হয়েছে ৫২২.১৩ কোটি টাকা। তৃণমূলের অনুদানও আগের বছরের ৬১৮.৮ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা। এমনটা দেখা গিয়েছে বিআরএস, বিজেডির মতো দলগুলির ক্ষেত্রেও।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, জম্মু ও কাশ্মীর, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে বিধানসভা ভোট হয়েছে। কমিশনে পেশ করা পদ্মশিবিরের নগদ ২০ হাজার টাকার বেশি প্রাপ্ত অনুদানের তথ্য বলছে, প্রায় ৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা এসেছে নির্বাচনী ট্রাস্ট মারফত। তা দলের প্রাপ্ত মোট অনুদানের ৬১ শতাংশ। বাকি ২ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা এসেছে ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট অনুদানের মাধ্যমে। ট্রাস্ট ছাড়াও বিজেপির তহবিলে শীর্ষ ৩০ দাতার মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানিও রয়েছে। এর মধ্যে কোভিড ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডেরই অনুদান ১০০ কোটি টাকা। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে রুংটা সন্স প্রাইভেট লিমিটেড (৯৫ কোটি), বেদান্ত লিমিটেড (৬৭ কোটি)। সবচেয়ে কম অনুদান হিন্দুস্তান জিঙ্ক লিমিটেডের। মাত্র ২৭ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে ভোটের বছরে বিজেপি প্রাপ্ত অনুদানের অঙ্ক গত ছ’বছরে সবচেয়ে বেশি।