• দুর্গাপুর গণধর্ষণ: নির্যাতিতার সাক্ষ্য নেওয়ার আর্জি সহপাঠীর কৌঁসুলীর
    বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: নির্যাতিতার প্রতি ভরসা অটুট, তাঁকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ডাক্তারি পড়ুয়া ওয়াসিফ আলির। নির্যাতিতাকে আদালতে সাক্ষী হিসেবে হাজির করার আর্জি করলেন ওয়াসিফের আইনজীবী। সোমবার দুর্গাপুর আদালতের বিচারক লোকেশ পাঠকের এজলাসে উঠেছিল দুর্গাপুর গণধর্ষণ মামলা। এখানে অভিযুক্তর আইনজীবী শেখর কুণ্ডু আদালতের কাছে লিখিত আর্জি করেন। এদিন বিচারককে বলেন, এই পর্বে এবার নির্যাতিতাকে সাক্ষী হিসেবে আনা হোক। হতেও তো পারে তাঁর বয়ানের উপর ভিত্তি করেই অভিযুক্ত জামিন পাবে। আদালতে সহপাঠীর উপর ভরসা করার পাশাপাশি ডাক্তারি পড়ুয়া গণধর্ষণের মামলা থেকে মুক্তি পেতে কলকাতা হাইকোর্টেও জামিনের আবেদন করেছে। হাই কোর্টে জামিনের আবেদন জানানোর পিছনে তাঁদের যুক্তি, নিম্ন আদালতে ধীরগতিতে শুনানি চলছে। 

    সোমবার দুর্গাপুর আদালতের বিচারকের সামনে বিষয়টি উত্থাপন করেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এক অভিযুক্ত হাইকোর্টে গিয়েছেন জামিনের আবেদন করে। তিনি আর্জিতে লিখেছেন, নিম্ন আদালতে ধীরগতিতে চলছে ট্রায়াল। আপনার কাছে আমি আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিদিন ট্রায়াল করা হোক। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হোক। এ প্রসঙ্গে বিচারক লোকেশ পাঠক বলেন, ওই জামিনের আবেদন প্রসঙ্গে যা বলার আপনি হাইকোর্টেই জানাবেন। পরে সরকারি আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই মামলায় অভিযুক্ত ডাক্তারি পড়ুয়া ওয়াসিফ আলিই জামিনের আবেদন করেছেন হাইকোর্টে। 

    দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে ষড়যন্ত্রের ধারাও প্রথম থেকে যুক্ত রেখেছে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। বিচার প্রক্রিয়া থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়ার সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকে লক্ষ্য রেখেই ধারা। ঘটনার দিন রাতে তরুণী ডাক্তারি পড়ুয়া ওয়াসিফ আলির সঙ্গেই দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পাশের নির্জন রাস্তায় হাঁটতে গিয়েছিলেন। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় তাঁদের একা পেয়ে দুষ্কৃতীরা ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পরবর্তীকালে, নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ ডাক্তারি পড়ুয়াকেও ধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার করে। ওয়াসিফের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। ধর্ষণের অভিযোগে দু’ মাসেরও বেশি জেলবন্দি তিনি। তারপরেও নির্যাতিতার সাক্ষ্যের উপর  আস্থা দেখা গিয়েছে অভিযুক্তের আইনজীবীর। আইনজীবী মহল মনে করছে, এই মামলায় নির্যাতিতার সাক্ষ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে সহপাঠী প্রসঙ্গে কী বলেন, তা রায়দানে বড় প্রভাব ফেলবে। 

    অন্যদিকে এদিন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের মামলা সাক্ষী দিতে হাজির হয়েছিলেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক নবনীতা দেব বর্মন। তিনি এই মামলায় অভিযুক্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ প্রক্রিয়া তদারকি করেন। অভিযুক্তের আইনজীবীরা সাক্ষীর কাছে জানতে চান কী কারণে রক্ত নেওয়া হয়েছিল, কতটা রক্ত নেওয়া হয়েছিল তা আপনি উল্লেখ করেছিলেন?  সাক্ষী বলেন, না। প্রশ্ন তোলেন, ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করার জন্য রক্ত নেওয়া হয়েছিল, ব্লোটিং পেপারে নেওয়াটা স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিওর নয়। এটাই এখানে করা হয়েছে। সাক্ষ্যদান পর্ব শেষে বিচারক জানান, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৮ ও ৯ জানুয়ারি। 
  • Link to this news (বর্তমান)