লগ্নজিতাকে হেনস্তার ঘটনায় শুরু তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর
বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ভগবানপুরে লাইভ শো চলাকালীন সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে হেনস্তার ঘটনায় ধৃত মেহেবুব মল্লিককে চার দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিল আদালত। সোমবার বেসরকারি স্কুলের কর্ণধার মেহেবুবকে কাঁথি এসিজেএম কোর্টে পেশ করা হয়। সেখানে পুলিশ সাতদিনের হেপাজত চায়। বিচারক চার দিন মঞ্জুর করেন। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে বলেন, ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২৬(২), ১১৫(২), ৭৪, ৭৯, ৩৫১(২) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’
এদিকে, জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীকে হেনস্তার ঘটনায় মেহেবুবের গ্রেফতারির পর তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। সোমবার বিজেপির পক্ষ থেকে ভগবানপুর থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশা হকের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানায় বিজেপি। এর আগে ভগবানপুরেরই একটি বেসরকারি স্কুলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায়ও পুলিশের ভূমিকা যথাযথ ছিল না বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। তিনিই বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, এই ঘটনায় স্রেফ জেনারেল ডায়েরি করে পুলিশ দায় এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল। শেষমেশ চাপে পড়ে এফআইআর রুজু এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘মেহেবুব তৃণমূল নেতা। ‘জাগো মা’ গান গাওয়ার সময় যেভাবে লগ্নজিতাকে হেনস্তা করা হয়েছে, তার নিন্দার ভাষা নেই। ভগবানপুর কি বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানের কোনও জায়গা হয়ে গেল নাকি? আসলে কেউ কেউ মনে করেন, ওরা যেটা চাইবে সেটাই হবে। এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতি। তৃণমূল কংগ্রেস শিল্পীর ও শিল্পের স্বাধীনতা নিয়ে বড়াই করে। সেই স্বাধীনতা এখন কোথায় গেল?’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘ভগবানপুরের মানুষ সংস্কৃতিসম্পন্ন। এই ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরের সম্মানকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশন বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে আনার পর পদক্ষেপ করা হয়েছে।’
পালটা ভগবানপুর-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রবীনচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘মেহবুবের বাবা এক সময় আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতিও হয়েছিলেন। কিন্তু, মেহবুবরা পার্টি করেন না। নিজেদের ব্যবসা দেখভাল করেন। অথচ, ধৃতকে আমাদের দলের নেতা বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভগবানপুরের চুল ব্যবসায়ীদের টার্গেট করা হচ্ছে। বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা ক্ষমা না চাইলে ভগবানপুরের সব চুল ব্যবসায়ীকে একত্রিত করে আন্দোলনে নামব।’ অভিযুক্ত মেহেবুব মল্লিক।