• 'ভুতুড়ে কাণ্ড'-র খবর পেয়ে অশরীরী খুঁজতে সশরীর রাত্রিবাস বিজ্ঞানকর্মীদের
    এই সময় | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, জলপাইগুড়ি: মালদার ইংরেজবাজারের পরে এ বার জলপাইগুড়ি। 'ভূত'-এর উপদ্রবে নাজেহাল দুই জেলার দুই দম্পতি। ইংরেজবাজারের যদুপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমজামতলায় ১০ দিনে সাত বার আগুন লাগায় বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন সনজ মণ্ডল। 'ভূত' খুঁজতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা সরেজমিনে দেখার পরে দুষ্কৃতীদের হাত থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সার্কুলার রোডে স্বপন দে-র বাড়িতে 'ভুতুড়ে কাণ্ড'-র খবর পেয়ে সোমবার সকালে হাজির হয়েছিলেন জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সদস্যরা।

    প্রাথমিক তদন্তের পরে তাঁরাও জানিয়েছেন, ঘটনার পিছনে পরিবারের সদস্য এবং বাইরের লোকের হাত থাকতে পারে। আরও নিশ্চিত হতে এ দিন রাতে তাঁরা ফের ওই বাড়িতে থেকে 'ভূত-রহস্য'-র সমাধান করতে চান বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক রাজা রাউত। তিনি বলেন, 'ক্লাবের সদস্যরা ওই বাড়িতে কয়েক দফায় গিয়েছেন। রাতে সেখানেই থাকবেন। ওই বাড়িতে অশরীরী আত্মা অর্থাৎ 'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি' আছে কি না, তা জানতে যন্ত্রপাতি নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।'

    কী ঘটেছিল রবিবার? স্বপন বলেন, 'রাত তখন প্রায় ১২টা হবে। হঠাৎ করেই পাশের ঘর থেকে কান্নার শব্দ। তার পরেই রান্নাঘরে থাকা ওভেন উড়ে এসে মেঝেতে পড়ে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল রান্নার বাসনপত্র।' মাঝরাতে ঘরের মধ্যে এমন ভুতুড়ে কাণ্ড দেখে সকলকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন পরিবারের কর্তা। হইচই শুনে শীতের রাতে বেরিয়ে আসেন প্রতিবেশীরাও। ঘটনা শুনে তাঁদেরও ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। স্বপন জানিয়েছেন, বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে এবং বৃদ্ধা মা রয়েছেন। রাতে ওই ঘটনার পরে সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কোথা থেকে কান্নার শব্দ এল, কারা রান্নাঘর থেকে বাসনপত্র ছুড়ে ফেলল, বুঝতে পারেননি তিনি।

    এলাকার বাসিন্দা মাধব সরকার বলেন, 'একটা অদ্ভুত কাণ্ড, ঘরে ঢুকে দেখি সমস্ত কিছু ওলট পালট হয়ে পড়ে রয়েছে। বিছানার তোশক-কম্বলে আগুন জ্বলছে।' প্রতিবেশী রুপা রায়ের দাবি, তিনিও কান্নার শব্দ শুনেছেন। এ দিকে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সকালে 'ভূত' এর কাণ্ড দেখতে জড়ো হন আশপাশের বহু মানুষ। ওই বাড়িতে আসেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার উত্তম বোস। তিনি বলেন, 'ঘটনার আসল কারণ জানতে সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবকে বলা হয়েছিল। তাদের একটি টিম এসে প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করে গিয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হচ্ছে।'

    এ দিকে ইংরেজবাজারের ঘটনায় বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা শাখা সংগঠনের সদস্য সুনীল দাস বলেন, 'সচেতনতার পরে এখনও ওই পরিবারটি আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। ভূতের ব্যাপারটা গুজব বলে মনে হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের বুজরুকির জন্য বাড়ি ফিরছেন না তাঁরা। নতুন করে মণ্ডল বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি।'

  • Link to this news (এই সময়)