নারায়ণ সিংহ রায়: খরস্রোতা তিস্তা নদীতে র্যাফটিংয়ের প্রশিক্ষণ করতে গিয়ে তলিয়ে মৃত্যু এক সেনা জওয়ানের। সেনা জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে সেনা ও জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। পুলিস ও সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই সেনা জওয়ানের নাম রাজ শেখর। তিনি ১৯১ আর্টিলারি রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক পদমর্যাদার জওয়ান ছিলেন। শিলিগুড়ি সংলগ্ন ব্যাংডুবি সেনা ছাউনিতে নিযুক্ত ছিলেন।
আরও জানা গিয়েছে, আগামী নতুন বছরে র্যাফটিংয়ের একটি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা রয়েছে। সেই প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল ইস্টার্ন কমান্ডের সেনা জওয়ানদের। সেই জন্য রবিবার থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করে ইস্টার্ন কমান্ডের ৩৩ ত্রিশক্তি কোরের জওয়ানরা। রবিবার কিছুটা প্রশিক্ষণ হয়। এরপর সোমবার র্যাফটিংয়ের জন্য তিস্তায় নামে ১৬ জনের সেনা জওয়ানের একটি দল। সিকিমের বারদাং থেকে তিস্তা নদীতে র্যাফটিং করতে করতে নামে ওই জওয়ানদের দলটি।
জওয়ানদের র্যাফটিংয়ে নজর রাখতে সেনার আরেকটি দল ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে আসছিল। র্যাফটিং করতে করতে তারা বাংলা সিকিম সীমান্ত তারখোলা পর্যন্ত পৌঁছে যান তারা। তিস্তা বাজার পর্যন্ত জওয়ানদের র্যাফটিং করার কথা ছিল। কিন্তু তারখোলাতে ঘটে বিপত্তি। তারখোলার পুরনো সেতুর একটি ভাঙা অংশ নদীর নীচে ছিল। এদিন তিস্তার জলস্তর কমে যাওয়ায় ওই ভাঙা অংশের একটি রড র্যাফটে আটকে যায়। যার ফলে র্যাফটের থেকে পরে যান রাজ শেখর। র্যাফটের থেকে পরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খরস্রোতা নদীতে তলিয়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তার জন্য তল্লাশি শুরু করে জওয়ানরা। তল্লাশির জন্য নামানো হয় অতিরিক্ত আরও একটি র্যাফ।
কিন্তু দেহ মিললেও তিস্তার স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজে সমস্যা তৈরি হয়। দুটি র্যাফ মিলে তল্লাশি চালানোর পর দেহ উদ্ধার হয় ওই জওয়ানের। পরে তারখোলার লোহার সেতুর থেকে দড়ি দিয়ে র্যাফট দুটিকে আটকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। পরে সেতু থেকেই দড়ির সাহায্যে ওই সেনার দেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর সেনাকে সিপিআর দেওয়া হলেও কোন লাভ হয়নি। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। যদিও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি সেনা আধিকারিকরা। তবে এই বিষয়ে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক কুহুক ভুষণ বলেন, 'তিস্তা নদীতে সেনা জওয়ানরা র্যাফটিংয়ের প্রশিক্ষণের সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। তবে গোটা বিষয়টা সেনার তরফেও দেখা হচ্ছে।'