• উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ, রাত জাগছে সীমান্তের ৬ গ্রাম
    এই সময় | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি

    সীমান্তের ছ'টি গ্রামকে কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা জমি দিতে রাজি হয়ে এনওসি দেন। কিন্তু বছর গড়ালেও আজও কাঁটাতারের বেড়ার কাজ শুরু করা হয়নি। এ দিকে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন কাঁটাতারের বেড়ার ও পাশে ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা জলপাইগুড়ির খুদিপাড়া, খেকিডাঙা, অনতুপাড়া, বাঙালপাড়া, হিন্দুপাড়া ও সিপাইপাড়ার প্রায় ২ হাজার বাসিন্দা। ও পারের দুষ্কৃতীরা যাতে আক্রমণ চালাতে না পারে, তার জন্য পালা করে রাত জাগছেন গ্রামের যুবকেরা।

    জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খুদিপাড়া, খেকিডাঙা, অন্তু পাড়া, বাঙাল পাড়া হিন্দুপাড়া ও সিপাইপাড়া গ্রামগুলি ভাতীয় ভূখণ্ডে হলেও কাঁটাতারের বেড়ার ও পারে রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কোনও সময়ে এই গ্রামগুলিতে হামলা হতে পারে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কাঁটাতার না থাকায় মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। রাতের অন্ধকারে কখনও গোরু চুরি, কখনও জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে যায়। বিএসএফ নিরাপত্তা দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তারা এতটাই দূরে থাকে যে, জওয়ানরা আসার আগেই দুষ্কৃতীরা তাদের কাজ সেরে পালিয়ে যায়।

    খুদিপাড়ার বাসিন্দা সুকুমার রায় বলেন, 'দীর্ঘদিনে থেকেই আমাদের নিরাপত্তার সমস্যা চলছে। তাই ছ'টি গ্রামকে কাঁটাতারের ভিতরে নিয়ে আসার দাবি করা হয়েছে।' জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের এই দাবির পরে গত বছর বিএসএফের চাণক্য আউট পোস্ট থেকে হিন্দুপাড়া সিপিডাব্লুডি রোড পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়। স্থানীয় বসিন্দারা স্বেচ্ছায় জমি দেন। কিন্তু আজও সেই কাজ শুরু করা হয়নি বলে অভিযোগ। সিপাইপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ নূর আলি বলেন, 'বাংলাদেশিদের নিয়ে সমস্যা তো আছেই। এছাড়া কাঁটাতারের এপারে থাকার কারণে বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হয় আমাদের। কোনও বাড়িতে অনুষ্ঠান থাকলে বিএসএফ একসঙ্গে একাধিক মানুষকে গ্রামে ঢুকতে দেয় না। বাইরে থেকে কোনও জিনিস নিয়ে আসতে গেলে সমস্যা হয়।'

    নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আক্রাম আলি বলেন, 'বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমস্যার কারণে নতুন করে ওই দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। ওই দেশে কিছু হলেই সেখানকার নাগরিকদের একাংশ ভারতকে দায়ী করে। এই অবস্থায় কাঁটাতার না থাকায় যে কোনও সময়ে বাংলাদেশিরা গ্রামে ঢুকে হামলা চালাতে পারে।' দু' মাস আগেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। এই আতঙ্কের পরিবেশ থেকে গ্রামবাসীদের রেহাই দিতে কাঁটাতারের বেড়ার কাজ দ্রুত শেষ করাই একমাত্র পথ বলে জানান পঞ্চায়েত সদস্য। এ বিষয়ে জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় বলেন, 'জমি অধিগ্রহণের পরেও কেনও কাজ শুরু করা হয়নি, তা নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলব।'

  • Link to this news (এই সময়)