• নতুন দল, প্রতীক ও প্রার্থী ঘোষণা হুমায়ুনের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এর পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনে রেজিনগর ও বেলডাঙা দুই জায়গায় তিনিই লড়বেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এই নির্বাচনে একাধিক আসনে লড়বেন তিনি। সেইমতো সোমবার কোন জায়গায় তিনি লড়বেন তাও জানিয়ে দিলেন। এর পাশাপাশি তাঁর দলের প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করলেন তিনি।

    গত শনিবার হুমায়ুন কবীর জানিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের টিএমসি ও ভারতীয় জনতা পার্টির বিজেপি’র মতোই তাঁর দলের সংক্ষিপ্ত নাম তিন অক্ষরের হবে। তবে তৃণমূল ও কংগ্রেস এই দুটো নামের মধ্যে কোনওটিই তাঁর দলের নাম হবে না। তার কারণও তিনি আগে ব্যাখ্যা করেছিলেন।

    এরপরেই এদিন তিনি তাঁর নতুন দলের নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘দলের নামের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজেই একাত্ম হতে পারবেন। বাংলার আমজনতার পার্টি হবে আমার দল। আমজনতার উন্নয়নের কথা ভাববে।’ দলের প্রতীক কী হতে পারে তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

    তাঁর বক্তব্য়, এর আগে তিনি যখন নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন তখন টেবিল প্রতীক নিয়ে লড়েছিলেন। নতুন দলের প্রতীক হিসেবে এই টেবিল প্রতীক তাঁর প্রথম পছন্দ। তবে নির্বাচন কমিশন এই প্রতীক অনুমোদন না করলে তিনি  দুটি গোলাপের কথাও ভেবে রেখেছেন। সেটাও না হলে তখন অন্য বিকল্পের কথা ভাববেন বলে জানান তিনি।

    দলের নতুন নাম ঘোষণা ও প্রতীকের কথা বলার পাশাপাশি এদিন বিধানসভা নির্বাচনের একাধিক কেন্দ্রে প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেন। খড়গপুর গ্রামীণ কেন্দ্রে জনতা উন্নয়ন পার্টির প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন ইব্রাহিম হাজি, মালদহের বৈষ্ণবনগরের প্রার্থী মুস্তারা বিবি, ভগবানগোলায় লড়বেন পেশায় ব্যবসায়ী আর এক হুমায়ুন কবীর। রানিনগর থেকে যিনি লড়বেন, তাঁর নামও হুমায়ুন কবীর।

    দক্ষিণ দিনাজপুরের ধনিরাম বিধানসভার প্রার্থীর নাম ডাক্তার ওয়েদুল রহমান। ইছাপুরের প্রার্থীর নাম সিরাজুল মন্ডল। নির্বাচনে এই প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন হিন্দু প্রার্থীরও নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই হিন্দু প্রার্থীদের মধ্যে মনীষা পাণ্ডে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে লড়বেন ও বালিগঞ্জের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন নিশা চট্টোপাধ্যায়।

    এছাড়াও তিনি এদিন শাসক ও বিরোধী দলের সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেছেন। এমনকি আগামী নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে শূন্যে নামিয়ে আনার হুমকি দেন সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের কথায়, ‘আমি বেঁচে থাকলে আগামী নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে শূন্যে নামিয়ে আনব।’

    একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে কটাক্ষ করেন।  তৃণমূল নেত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘আপনি মানুষকে ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’ করেন। কত দিন আর এই শক্তি থাকে। আপনার সঙ্গে যদি কোনও গদ্দারি করে থাকি আপনি তো বলবেনই। কিন্তু আপনি কত রকম মিথ্যাচার করেছেন, সেগুলো বাংলার মানুষকে জানাব। সিদ্ধান্ত মানুষ নেবে।’

    এছাড়া  ইউসুফ পাঠান, কীর্তি আজাদ এবং শত্রুঘ্ন সিন্‌হার মতো অবাঙালিদের তৃণমূল সাংসদ পদের জন্য মনোনীত করেছে তা নিয়েও কটাক্ষ করেন হুমায়ুন।শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করে তিনি এদিন বলেন, ‘বিজেপিকে সতর্ক করছি। শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, মুসলিম বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে নাকি রাস্তায় ফেলে দেবেন। আমরা জিতেই বিধানসভায় যাব। ২০০ আসনে লড়াই করলে ১০০ আসনে জিতব।

    তার মধ্যে ৭০ জন মুসলিম থাকবে, ৩০ জন হিন্দু। আপনার বাবা শিশিরবাবুর ক্ষমতা থাকলে আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখুন। দেখব কত বড় পালোয়ান। তুমি মেদিনীপুরের ছেলে। আমিও মুর্শিদাবাদের ছেলে।”

    এদিন এই সভা থেকে হুমায়ুন তাঁর নতুন দলের পরবর্তী সভার সময়সূচি ও স্থান ঘোষণা করেন। আগামী ৪ জানুয়ারি ডোমকল এবং ৫ জানুয়ারি হরিহরপাড়ায় হুমায়ুনের নতুন দলের পরের সভা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর দাবি , তৃণমূল এবং আইএসএফ থেকে মোট পাঁচ হাজার কর্মী-সমর্থক তাঁর দলে যোগ দেবেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)