প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন মাথা, অঙ্গ কেটে ভাসানো হল গঙ্গায়
বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
লখনউ: প্রেমিকের সহায়তায় নিখুঁত পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করেছিল স্ত্রী। দেহ যাতে শনাক্ত করা না যায়, তার জন্য মাথা ও নানা অঙ্গপ্রতঙ্গ কেটে ভাসিয়ে দেওয়া হয় গঙ্গায়। আর বাকি দেহ কালো ব্যাগে ভরে নিকাশি নালায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এত কিছুর পরেও শেষরক্ষা হল না। রাহুলকে খুনের অভিযোগে স্ত্রী রুবি ও তার প্রেমিক গৌরবকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কীভাবে খুন করা হয়েছিল রাহুলকে, সেব্যাপারে চান্দৌসি কোতোয়ালি থানার পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে হাড়হিম করা তথ্য।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর চান্দৌসির ইদগা এলাকার একটি নালা থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির ছিন্নভিন্ন দেহ সহ কালো ব্যাগ। মাথা না থাকায়, সেই দেহ চেনার উপায় ছিল না। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিছু না মেলায় ফরেন্সিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখনই প্রথম ব্রেক আসে। মৃতের ঘাড়ে উলকিতে লেখা ছিল ‘রাহুল’। তদন্তকারীরা বুঝে যান, রাহুল নামে কাউকে খুন করা হয়েছে। এরপর ‘রাহুল’ নামের কোনও মিসিং পার্সন ডায়েরি রয়েছে কি না, তা জানতে সব থানাকে বার্তা পাঠানো হয়। উত্তর আসে চুন্নি মহল্লা থানা থেকে। ২৪ নভেম্বর রুবি নামে এক মহিলা নিজের স্বামীর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন।
এরপর দেহ শনাক্ত করার জন্য রুবিকে ডেকে পাঠানো হয়। পোশাক থাকা সত্ত্বেও স্বামীর দেহ চিনতে অস্বীকার করেন তিনি। তবে রুবির অস্বস্তি চোখ এড়ায়নি দুঁদে পুলিশ আধিকারিকদের। তাছাড়া তাঁর পরস্পরবিরোধী বয়ান সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তোলে। এরপর রুবির মোবাইল ফোন পরীক্ষা করতেই এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর ছবি দেখা যায়। সেই ব্যক্তির পোশাকের সঙ্গে মৃতদেহের পোশাকের মিল ছিল। এরপর জেরায় ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করেন রুবি। জানান, স্থানীয় যুবক গৌরবের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই প্রেমিকের সঙ্গে ঘর করতেই স্বামী রাহুলকে খুন করেছেন তাঁরা।
রুবির বয়ান অনুযায়ী, স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে ১৭ নভেম্বর রাতে গৌরবকে বাড়িতে ডেকে নেয়। সে সময় রাহুল হঠাৎই বাড়ি ফিরে তাঁদের আপত্তিজনক অবস্থায় দেখে ফেলেন। বচসার সময় লোহার রড দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করে রুবি। সঙ্গে সঙ্গে রাহুলের মৃত্যু হয়। এরপর খুন ঢাকতে দেহ নষ্টের পরিকল্পনা করে দু’জনে। পরদিন ‘কাটার মেশিন’ দিয়ে রাহুলের মাথা, হাত ও পা দেহ থেকে আলাদা করা হয়। এরপর একটি ব্যাগে দেহাংশগুলি ভরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় রুবি ও গৌরব। বাকি দেহ একটি ব্যাগে ভরে ইদগার একটি নালায় ফেলে দেয়। ‘কাটার মেশিন’ এবং লোহার রডটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।