• পৌষমেলার জন্য দেওয়া হয়নি স্পেশাল ট্রেন, ক্ষুব্ধ পর্যটকরা
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: পৌষমেলা উপলক্ষ্যে এখনও মিলল না বিশেষ ট্রেন! গত কয়েক বছরে পৌষমেলা উপলক্ষ্যে হাওড়া-রামপুরহাটের বিশেষ ট্রেন চালিয়েছে রেল। পর্যটকরা ভেবেছিলেন, এবছরও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে রেলের তরফে সেই সুবিধা দেওয়া হবে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে পৌষমেলা শুরু হয়ে গেলেও এখনও কোনও বিশেষ ট্রেন চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, মেলা উপলক্ষ্যে এখনও বিশেষ কোনও ট্রেনে দেওয়া হয়নি। ট্রেন দেওয়া হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। 

    পৌষমেলা উপলক্ষ্যে বীরভূম ও আশপাশের জেলা তো বটেই, কলকাতা থেকেও বহু মানুষ শান্তিনিকেতনে আসেন। হাওড়া কিংবা শিয়ালদহ থেকে উত্তরবঙ্গের সিংহভাগ ট্রেনই বোলপুর-শান্তিনিকেতনের উপর দিয়ে যায়। তবে সেই ট্রেন এই মুহূর্তে ভিড়ে ঠাসা। টিকিটের হাহাকার চলছে। এই শীতের ছুটিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে। উত্তরবঙ্গে ঘুরতে যান বহু মানুষ। পাশাপাশি পড়াশোনা কিংবা কর্মসূত্রে দক্ষিণবঙ্গে থাকা উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা ছুটিতে বাড়ি ফেরেন। তাই শুধুমাত্র পৌষমেলা দেখতে উত্তরবঙ্গগামী কোনও ট্রেনের টিকিট পান না পর্যটকরা। তাই যাত্রীদের ভরসা সেই শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, বিশ্বভারতী এক্সপ্রেস বা তারা মা এক্সপ্রেস, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস সহ হাতেগোনা কয়েকটি ট্রেন। সমস্ত ট্রেনের ওয়েটিং লিস্ট দীর্ঘ। সেকারণে অনেকে বিশেষ ট্রেনের অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেই ট্রেন চালু না হওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মেলায় আসতে চাওয়া মানুষজন। 

    গত কয়েক বছর ধরেই পৌষমেলা উপলক্ষ্যে পূর্বরেলের তরফে হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল হয়ে রামপুরহাট পর্যন্ত একটি স্পেশাল ট্রেন চালায় রেল। এই ট্রেনটি সকালে হাওড়া থেকে ছেড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই বোলপুর পৌঁছয়। আবার বিকেলে বোলপুর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যার মধ্যে হাওড়া পৌঁছয়। বিশেষ ট্রেনটির ব্যান্ডেল, বর্ধমান, গুসকরা, বোলপুর, প্রান্তিক, আহমদপুর ও সাঁইথিয়া স্টেশনেও স্টপেজ থাকে। সাধারণ দ্বিতীয় শ্রেণির আসন থাকায় ট্রেনের ভাড়াও সাধারণের নাগালের মধ্যে থাকে। কিন্তু এবছর ট্রেনটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীদের অনেকেই। কলকাতার বেহালার বাসিন্দা অরুণাভ গুপ্ত, দেবাশিস দে বলেন, প্রতি বছর আমরা এই মেলায় আসি। রেলের বিশেষ ট্রেন থাকলে যাতায়াত কিছুটা আরামদায়ক হয়। কিন্তু এবার কোনও বাড়তি ট্রেন নেই। ভিড়ের চাপে অন্য ট্রেনে ওঠার অত্যন্ত ঝুঁকির। 

    ট্রেনের টিকিটের হাহাকার ও ভিড়ের চাপ সামলাতে রেল কর্তৃপক্ষ কেন এখনও নীরব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মেলার ব্যবসায়ীদের দাবি, সঠিক যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকলে মেলার কেনাবেচাতেও তার প্রভাব পড়বে। এতে আমাদের ক্ষতি হবে। মেলায় আসা অনেকে জানান, ট্রেনের টিকিট না মেলায় বাধ্য হয়ে সড়কপথে বা প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এর ফলে শান্তিনিকেতনে যানজট বাড়ছে, তেমনই পকেটের উপর বাড়তি চাপ পড়ছে। এমনিতেই হোটেল ও গেস্ট হাউসের ভাড়া চড়া, তার উপর যাতায়াত খরচ বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকরা হতাশ। যদিও রেলের একটি সূত্রের দাবি, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
  • Link to this news (বর্তমান)