• পারদ নামতেই নবগ্রামে কিরীটেশ্বরীর পুজো দিতে ভক্তের ঢল, উৎসাহ তুঙ্গে
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, লালবাগ:  কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার মেলার দ্বিতীয় দিনে সতীপীঠ কিরীটেশ্বরীতে ভক্তের ঢল নামে। সকাল থেকেই মেলায় ঘুরতে আসা আট থেকে আশি মিষ্টির স্টলগুলির সামনে ভিড় জমাতে থাকেন। খাবারের স্টলের পাশাপাশি মেলায় নাগরদোলা, চরকি, মিকি মাউস জাম্পিং হাউস সহ মনোরঞ্জনের হরেক স্টলে উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল বেশি। এদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মায়ের পুজো দিতে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। মেলা কমিটির বক্তব্য, তাপমাত্রার পারদ নেমে যাওয়ায় সকালের দিকে মেলায় ভিড় কম ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের কামড় কিছু কমতেই বাড়তে থাকে ভিড়। মেলার মাঠ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পড়শি নদীয়া ও বীরভূম থেকেও দলে দলে প্রচুর মানুষ পিকনিক করতে এসেছিলেন। নবগ্রাম থানার কিরীটেশ্বরী ৫১ সতীপীঠের অন্যতম। মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি। গত কয়েক শতাব্দী ধরে মন্দির সংলগ্ন মাঠে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা হয়ে আসছে। বছরভর ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকলেও একমাস ধরে পৌষমেলায় ভক্ত ও দর্শনার্থীর ঢল নামে।  বহরমপুরের বাসিন্দা সনাতন মিশ্র  পরিবার নিয়ে মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন। সনাতনবাবু বলেন, প্রতি বছর পৌষ মেলার সময় কিরীটেস্বরী মাকে পুজো দিতে আসি। পুজো শেষে মেলা ঘুরে দেখছি। 

    আবার নদীয়ার ঘূর্ণি থেকে পুজো দিতে এসেছেন বিপ্লব রায়। তিনি বলেন,  ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ কিরীটেশ্বরী আসার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ ঘুরতে এসেছিলাম। সেই সুযোগেই সবাই  কিরীটেশ্বরী ঘুরে গেলাম। মাকে দর্শন করে এবং মেলা দেখে ভাল লেগেছে। 

    এই মন্দিরের সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, গত শনিবার থেকে মেলা শুরু হয়েছে। তবে প্রথম দিন অপেক্ষাকৃত ভক্ত সংখ্যা কম ছিল। এদিন কয়েকশো ভক্ত এসেছিলেন। সারাদিন ধরেই পুজো চলতে থাকায় লম্বা লাইন পড়েনি। প্রত্যেকেই নির্বিঘ্নে মায়ের পুজো দিতে পেরেছেন। পুজোর পাশাপাশি এইদিন নিয়ম মত মাকে দুপুরে মৎস্য সহযোগে অন্ন সহ তিনবেলা ভোগ নিবেদন করা হয়।  মেলা কমিটির এক উদ্যোক্তার কথায়, এটা মূলত গ্রাম্য মেলা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এবং বাইরে থেকে যাঁরা আসেন তাঁরা সাধারণত দুপুরের মধ্যেই পুজো দিয়ে এবং মেলা দেখে ফিরে যান। কিরীটেশ্বরী এবং আশপাশের গ্রামগুলি থেকে মানুষ দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরেই মেলায় আসেন। ফলে দুপুরের পড়ে থেকেই মেলায় ভিড় বাড়তে শুরু করে। তবে মেলায় ভিড় হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মুখেও হাসি ফুটেছে। এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বলেন, শনিবার প্রথম দিনে ব্যবসা ভালো হয়নি। দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই খদ্দেরদের ভিড় ছিল। এদিকে মেলা চলাকালীন কোনও অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মেলায় প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)