• নবান্নের চেষ্টাতেও ডিএম অফিসের বড়বাবুর দ্বিতীয় স্ত্রীর পেনশন আটকে, বাধা বাম জমানার পুরোনো বিজ্ঞপ্তিই
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু ও রাজদীপ গোস্বামী: কলকাতা ও মেদিনীপুর: ২০০৩ সালে অবসরগ্রহণের সময় সুকুমার পিড়ি ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর ডিএম অফিসের বড়বাবু (আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট)। যথারীতি পেনশনও পাচ্ছিলেন। কিন্তু, তাঁর মৃত্যুর পরে সৃষ্টি হয়েছে এক সমস্যা। পেনশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মায়া পিড়ি। কারণ, বাম আমলে, ১৯৯৪ সালের নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে তা দপ্তরকে অবশ্যই জানাতে হবে। বিষয়টি তৎকালীন ডিএম বা জেলাশাসককে জানানোর কথা ছিল। অবসরগ্রহণের প্রায় ১৪ বছর এবং প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সুকুমার পিড়ি দ্বিতীয় বিবাহ করেন। কিন্তু সেই বিবাহ রেজিস্ট্রির তথ্যাদি তিনি ডিএম অফিসে জানাননি। ইতিমধ্যে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে সুকুমারবাবুর মৃত্যু হয়। এই কারণে ৭১ বছর বয়সি মায়াদেবীকে রাজ্য পেনশন দিতে পারছে না। নবান্নের হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও সুরাহা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টিকে মানবিকভাবে বিচার করে তাঁর পেনশন চালু করার আর্জি জানিয়েছেন মায়া দেবী। 

    স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই পেনশনের দাবিতে লড়াই শুরু মায়া পিড়ির। ডিএম অফিস, রাজ্য অর্থদপ্তর থেকে শুরু করে এজি বেঙ্গল সংশ্লিষ্ট সব অফিসেই ছোটাছুটি চলছে। কিন্তু সমাধান এখনও অধরা। কারণ, সমস্ত ক্ষেত্রেই বাদ সাধছে অর্থদপ্তরেরই বিজ্ঞপ্তি নম্বর ১৮৮৬ এফ। তবে হাল ছাড়েনি কোনও পক্ষই। মায়াদেবীর পেনশন জট মানবিক দৃষ্টিতে ছাড়ানো যায় কি না খতিয়ে দেখছে নবান্ন।

    দ্বিতীয় বিবাহের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক করে বিজ্ঞপ্তি জারি কেন? অভিজ্ঞ আমলাদের বক্তব্য, অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের পেনশন পেমেন্ট অর্ডারে (পিপিও) তাঁর স্ত্রীর নামের উল্লেখ থাকে। স্বামীর মৃত্যুর পর শুধু সেই মহিলাই পেনশনের আইনি অধিকারী। এক্ষেত্রে সুকুমারবাবুর প্রথম স্ত্রীর নামটিই শুধু ছিল। তিনি মারা গিয়েছেন ২০১৮ সালে। তার পরের বছর দ্বিতীয় বিবাহ রেজিস্ট্রির করেন সুকুমারবাবু। ফলে আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় স্ত্রীর পেনশন পেতে বাধা নেই। কিন্তু মায়া পিড়ির সঙ্গে বিবাহের বিষয়টি সুকুমারবাবু অফিসকে অবগত করেননি এবং তার উল্লেখ নেই পিপিওতেও। বিষয়টি এখন মানবিক দৃষ্টিতেই বিচার করার চেষ্টা করছে নবান্ন। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে ডিএম অফিসের তরফে অর্থদপ্তরে আর্জি জানাতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)