ভোটারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নথি ‘আপলোড’ শুরু করলেন বিএলওরা, অষ্টমের সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য নয়: কমিশন
বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এখন শুনানির প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলওরা মঙ্গলবার থেকেই ভোটারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নথি আপলোডের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এরপর শুরু হবে ওই সব নথি খতিয়ে দেখার কাজ। এর মাঝেই জানা গিয়েছে, শুনানির নথি হিসেবে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর স্কুল থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হবে শুনানির পর্ব। তার আগেই ভোটারদের থেকে প্রাপ্ত সমস্ত নথি অ্যাপ মারফত বিএলওদের আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এর জন্য অ্যাপে একটি নতুন অপশন দেওয়া হয়েছে। ওই ট্যাবের মাধ্যমেই ভোটারদের থেকে প্রাপ্ত নথি আপলোড করতে হবে। তারপর ইআরও তা খতিয়ে দেখবেন। আপাতত ২০০২ সালের তালিকায় যেসব ভোটারের নিজের নাম বা আত্মীয়র নাম ছিল না, তাঁদের থেকে প্রাপ্ত নথি আপলোড করছেন বিএলওরা। সেই সঙ্গে এদিন শুনানির নোটিশও বিলি করা হয়েছে ভোটারদের। নথি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কোনওরকম ফাঁক রাখা চলবে না বলে ইআরওদের আরও একবার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। নথির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোনওরকম প্রশ্ন থাকলে অবিলম্বে তা জেলাশাসক অর্থাৎ ডিইও এবং অতিরিক্ত রোল পর্যবেক্ষকদের নজরে আনতে হবে। এছাড়া, আজ বুধবার মাইক্রো অবজার্ভারদের প্রশিক্ষণ দেবে কমিশন। শুনানিতে নজরদারির কাজ করবেন এই মাইক্রো অবজার্ভাররা। কমিশন আরও জানিয়েছে, যে ১২টি নথির কথা বলা হয়েছে, তার বাইরে কোনও নথিই গ্রহণযোগ্য নয়। অষ্টম শ্রেণি পাশ করলে স্কুল থেকে যে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা গ্রহণযোগ্য বলেই ধরা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলেই স্পষ্ট করেছে কমিশন।
এদিকে, মঙ্গলবার একাধিক ইস্যুতে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুলক রায়, শশী পাঁজা এবং সাংসদ পার্থ ভৌমিক। সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, অন্তত ন’জন জীবিত ভোটারকে ‘মৃত’ এবং ‘নিখোঁজ’ দেখিয়ে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে চন্দ্রিমাদেবী বলেন, ‘ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা নিয়ে অনেকে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আছেন। বাবার নামের বানান ভুল হলেও শুনানির জন্য ডাকা হচ্ছে। আমরা প্রশ্ন তুলেছি, এসব ক্ষেত্রে শুনানির নোটিশ দেওয়ার কী প্রয়োজন?’ তাছাড়া, শুনানি কেন্দ্রে সাধারণ মানুষ যাতে কোনওভাবে অসুবিধায় না পড়েন, কমিশনকে তা নিশ্চিত করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘গরিব মানুষকে শুনানির জন্য টাকা খরচ করে যাতে দূরে যেতে না হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে।’ এছাড়াও যাঁরা রাজ্যের বাইরে কাজ করেন, তাঁরা কীভাবে শুনানিতে যোগ দেবেন, বৈঠকে সেই প্রশ্নও তুলেছে রাজ্যের শাসক দল।