১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চিংড়িঘাটার মেট্রো-জট কাটাতেই হবে
বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর টালবাহানা বা দায় এড়ানো নয়! এবার একেবারে সময়সীমা বেঁধে দিল হাইকোর্ট। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের (অরেঞ্জ লাইন) চিংড়িঘাটা জট কাটাতেই হবে। ওই দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে এই মেট্রোপথের বকেয়া কাজ।
মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কাজ শেষ করার জন্য কীভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে, ৬ জানুয়ারির মধ্যে সেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে জানাতে হবে রাজ্য এবং ট্রাফিক পুলিশকে। এই নির্দেশের উপর অ্যাডভোকেট জেনারেল স্থগিতাদেশ চাইলেও তা খারিজ করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন রাজ্যের তরফে জানানো হয়, আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারির আগে চিংড়িঘাটায় যান নিয়ন্ত্রণ কোনওভাবেই সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে শীতকালীন উৎসবের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন ট্রাফিক ব্লক করা হলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বে। যদিও রাজ্যের এই যুক্তি খারিজ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘এখন বিভিন্ন উৎসবেরই সময়। ভারতবর্ষ উৎসবের দেশ। একটা উৎসব শেষ হলেই আর একটি শুরু হয়ে যায়। মেট্রোর সঙ্গে বৃহত্তর অংশের জনগণের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। তারপরও রাজ্যের এই মনোভাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। বারবার বলার পরও কাজ হয়নি। তাই আমরা রাজ্য এবং ট্রাফিক পুলিশকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।’
চিংড়িঘাটায় মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশে কাজ না হওয়ায় নিউ গড়িয়া থেকে কলকাতা বিমানবন্দর পর্যন্ত টানা মেট্রো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এই অংশে মেট্রোর কাজ শেষ করার জন্য রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। ইতিপূর্বে একাধিকবার চিংড়িঘাটায় মেট্রোর কাজ নিয়ে রাজ্য, কেন্দ্র, নির্মাণকারী সংস্থা আরভিএনএল সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিকে নিয়ে সদর্থক বৈঠক করে সিদ্ধান্তে আসতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য বরাবর বলে এসেছে, সদা ব্যস্ত বাইপাসের উপর চিংড়িঘাটা বন্ধ রাখলে বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাতেও তীব্র যানজটের আশঙ্কা থাকবে।
রাজ্যের এই বক্তব্য সত্ত্বেও জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে ফের দু’পক্ষকে আলোচনার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশ ফলপ্রসূ না হওয়ায় এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিদ্বয়। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের বৈঠকে কাজের ব্যাপারে ঐকমত্য হলেও তার বাস্তবায়ন করা যায়নি। এমনকি, গত ১৭ ডিসেম্বর আবার সব পক্ষকে বৈঠকে বসে কাজের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশ দিয়েও লাভ হয়নি। এরপরেই হাইকোর্টের নির্দেশ, রাজ্য এবং ট্রাফিক পুলিশকেই কাজের পরিকল্পনা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কীভাবে কী করা হবে, তা জানাতে হবে আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া কাজ সম্পন্ন করতে হবে। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পাওয়ার পর তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর নতুন বছরের শুরুতেই এই রুটে ছুটবে মেট্রো, আশায় বুক বাঁধছে শহরবাসী।