• ডোমজুড়ে সাত বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ, ধৃত ঠিকা শ্রমিক
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: রাতের অন্ধকারে নির্জন রাস্তা থেকে সাত বছরের এক শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকা শ্রমিকের বিরুদ্ধে। ওই শ্রমিক রাস্তা তৈরির কাজে যুক্ত। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ডোমজুড়ের মাকড়দহ ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায়। এই ঘটনাকে ঘিরে গভীর রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা ঠিকা সংস্থার একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ডোমজুড় থানার পুলিশকে। মঙ্গলবার দুপুরে হেমন্ত ঘোড়ুই নামের বছর পঁচিশের ওই ঠিকা শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাকড়দহ ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় একটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছিল। হুগলির জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা হেমন্ত ঠিকা শ্রমিক হিসেবে সেখানে কাজ করছিল। অভিযোগ, সোমবার বিকেলের পর সে মদ্যপ অবস্থায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। রাত ৮টা নাগাদ স্থানীয় একটি মন্দিরে কীর্তনের পর প্রসাদ খেয়ে একাই বাড়ি ফিরছিল ওই শিশুকন্যা। অন্ধকার রাস্তায় তাকে পেয়ে হেমন্ত ছুটে এসে তার মুখ চেপে ধরে। এরপর ওই শিশুকন্যাকে সে তুলে নিয়ে যায় পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এরপর এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় হেমন্ত। বেশ কিছুক্ষণ পর ওই বাড়ি থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পান কয়েকজন মহিলা। তাঁরাই শিশুটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই চরম উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। যেখানে ঠিকাদার সংস্থাটি রাস্তার কাজ করছিল, সেখানে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তা তৈরির সামগ্রী, বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে পাশের খালে ফেলে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সেগুলিতে। পরিস্থিতি সামলাতে বিশাল বাহিনী আসে ডোমজুড় থানার পুলিশ। নামানো হয় র‍্যাফ। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে গভীর রাতে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাত থেকেই অভিযুক্তের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ট্রেন ধরে ভিনরাজ্যে পালানোর ছক কষেছিল। তার আগেই এদিন দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘হাওড়া থেকে পালিয়ে হুগলির দিকে চলে গিয়েছিল সে। সুযোগ বুঝে ট্রেন ধরে পালানোর ফন্দি ছিল। তার আগেই তাকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই ঠিকা শ্রমিক প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় এলাকায় ঘুরে বেড়াত। তা নিয়ে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা ঠিকাদারকে অভিযোগ করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে, এতদিন ওই ঠিকা সংস্থার শ্রমিকদের স্থানীয় একটি স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে ওই সংস্থাকে দিয়ে কাজ না করানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতেও সরব হয়েছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)