• বধূ খুনে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারি চেয়ে বারাসত আদালতে তীব্র বিক্ষোভ, মৃতার পায়ে কালো দাগ নিয়ে রহস্য
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বারাসতে এক বধূকে খুনের ঘটনায় ধৃত স্বামীর জেল হেপাজত হল মঙ্গলবার। পাঁচদিন পুলিশ হেপাজতের পর মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। এদিকে, এদিন বারাসত আদালতের সামনে ধৃতের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিবার ও পরিজনরা। পাশাপাশি অভিযুক্ত শ্বশুর সুজয় দত্ত ও শাশুড়ি নূপুর দত্তকে গ্রেফতারের দাবিতেও সরব হন তাঁরা। তবে, ঘটনায় মৃতার পায়ের কালো দাগ নিয়ে রহস্য বাড়ছে। কারণ, জেরায় সৌম্য নামে মৃতার স্বামী তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, সেটি বাইকের সাইলেন্সারের দাগ। কিন্তু এটা নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে পুলিশের। কারণ তদন্তকারীদের অনুমান, এটা আগুনের ছ্যাঁকা। তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশ অপেক্ষা করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য।

    ক’দিন আগে বারাসতের অশ্বিনীপল্লিতে সুনীতা সরকারকে খুনের অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ১৭ ডিসেম্বর খুনের পরেই মৃতার বাবা সর্বেন্দ্রদেব সরকার সুনীতার স্বামী সৌম্য দত্ত, শ্বশুর সুজয় দত্ত ও শাশুড়ি নূপুর দত্তের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন বারাসত থানায়। সঙ্গে সঙ্গেই মূল অভিযুক্ত সৌম্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে ঘটনার পাঁচদিন পরে এখনও অধরা মৃতার শ্বশুর ও শাশুড়ি। মৃতার পরিবারের দাবি, শ্বশুর সুজয় দত্ত কলকাতা পুলিশে চাকরি করেন। মৃতার বাবার দাবি, ১৭ ডিসেম্বর মেয়ের শ্বশুর ও শাশুড়িকে শ্বশুরবাড়ির ডাইনিং রুমে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। অভিযোগ দায়ের হতেই তাঁরা পালিয়েছেন।

    এদিকে, পাঁচদিনের পুলিশি হেপাজতের শেষে এদিন সৌম্যকে হাজির করা হয় বারাসত আদালতে। খবর পেয়ে বারাসত আদালতে হাজির হন মৃতার পরিবার-প্রতিবেশীরা। তাঁদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। মূল অভিযুক্তর কঠোর শাস্তি সহ পলাতক শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা। এলাকাতেও একই দাবিতে পোস্টার পড়েছে।

    মৃতার মা মধুছন্দা সরকার বলেন, পুলিশের তদন্তে আমরা আস্থাশীল নই। কারণ, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে অভিযোগ দায়ের হলেও তাঁদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। তবে দোষীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত থামব না আমরা। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলারের স্বামী সজল ভট্টাচার্য বলেন, পুলিশের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। আশা করছি পুলিশ বাকিদেরও গ্রেফতার করবে। এদিকে, পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রিপোর্ট হাতে এসেছে। তাতে শ্বশুর, শাশুড়ি-যোগের বিষয়টি পরিষ্কার নয়। স্থানীয় বেশ কয়েকজনের মতামত রেকর্ডও করা হয়েছে। মৃতার পায়ের কালো দাগ নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে।

    এই প্রসঙ্গে বারাসতের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে এই ঘটনার যোগসাজশের তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা চলছে। প্রমাণ এলেই গ্রেফতার করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)