• দিল্লির রাজপথে উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে ‘হেনস্তা’, বিক্ষোভ দেখাতে বাধা, মারধর মা-কেও
    প্রতিদিন | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের জামিনে তাঁরা ভীত। দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের পর দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে অবস্থানে বসেন নির্যাতিতা, তাঁর মা এবং সমাজকর্মী তথা আইনজীবী যোগিতা ভায়ানা। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দিল্লিতে। অভিযোগ একপ্রকার জোর করে পুলিশ এবং সিআরপিএফ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

    মঙ্গলবারই দিল্লি হাই কোর্ট উন্নাও কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কুলদীপ সিং সেঙ্গারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা মকুব করে। জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্যাতিতার বাবার হত্যা সংক্রান্ত মামলার ফয়সলা না হওয়া পর্যন্ত জামিনে থাকবেন তিনি। যদিও সেই জামিনের জন্য একাধিক শর্ত চাপায় আদালত। কিন্তু সেঙ্গার জেলমুক্ত হওয়ায় রীতিমতো শঙ্কিত নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। নির্যাতিতার কথায়, ‘‘কুলদীপ মুক্তি পাওয়ায় আমরা ভীত।’’ সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ভোট আসছে তাই ওকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। যদি এই ধরনের ধর্ষণে অভিযুক্ত মুক্তি পেয়ে যায়, তাহলে আমরা কী করে নিরাপদে থাকব।”

    বুধবার নির্যাতিতা, তাঁর মা এবং নারী অধিকার কর্মী যোগিতা ভায়ানা ইন্ডিয়া গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁদের জোর করে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। এর পরই এক্স পোস্ট করে যোগিতা ভায়ানা লেখেন, “গণধর্ষণের নির্যাতিতার সঙ্গে কি এমন আচরণ করা উচিত? বিচার চাওয়াটা কি তাঁর দোষ? এটা কেমন ন্যায়বিচার?” নির্যাতিতা বলছেন, “বিচারপ্রক্রিয়ার উপর আস্থা আছে। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই সমস্যার মুখে পড়েছি। এখন মনে হচ্ছে জেলে থাকলেই ভালো হতো।” তাঁর আক্ষেপ, “আমি সেসময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে সেটা করিনি।”

    ২০১৭ সালের ৪ জুনে গণ-ধর্ষিতা হন উন্নাওয়ের কিশোরী। মূল অভিযুক্ত ছিলেন তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার। পরিবার পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ ছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লেখেন নির্যাতিতা। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে ধর্নায় বসেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। সেখানেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। এই ঘটনার পর উলটে নির্যাতিতার বাবাকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার বাবার। একই বছর ডিসেম্বর মাসে দোষী সাব্যস্ত হয় কুলদীপ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হয় কুলদীপকে। বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেনেগারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। কিন্তু দিল্লি হাই কোর্ট তাঁকে মুক্তি দিয়ে দিয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)