বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পাহাড়-সমতলের গাড়ি চালকদের দড়ি টানাটানির জেরে নাকাল দশা পর্যটকদের! এনজেপি অথবা বাগডোগরায় নেমেও কেউ বুঝতে পারছেন না আদৌ শৈল শহরে পা রাখতে পারবেন কিনা! এই অবস্থায় মুশকিল আসান হল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম (এনবিএসটিসি)। পরিবহণ নিগমের তরফে ফের ‘ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি’ সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেটা হলে সামান্য খরচে পর্যটকরা পৌঁছে যেতে পারবেন পাহাড়ের গন্তব্যে।
‘ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি’ বলতে এনবিএসটিসির পঁচিশ আসনের ছোট বাস! পর্যটকরা শিলিগুড়ি থেকে ওই বাসে চেপে মাত্র আট হাজার টাকায় রিজার্ভ করে পৌঁছে যেতে পারবেন শৈল শহরে। এক্ষেত্রে মাথাপিছু ভাড়া পড়বে মাত্র ৩২০ টাকা। এছাড়াও যেতে পারবেন কালিম্পং, সিকিমে। এনবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপঙ্কর পিপলাই বলেন, “পর্যটকদের পচিশজনের দল তৈরি করে ‘ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি’ ভাড়া করতে হবে। অন লাইন বুকিংয়ের সুবিধা থাকবে। তাই পর্যটকদের সমস্যা হবে না।”
ফি বছর পর্যটন মরশুমে পর্যটকদের কাছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ওঠে। গ্রীষ্মের মরশুমেও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছোট গাড়িতে শৈল শহরে পৌঁছতে সাড়ে তিন হাজার টাকা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এবার শীতের মরশুম শুরু হতে পাহাড় ও সমতলের গাড়ি চালকদের সংঘাত চরম আকার নিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সমতলের চালকরা পাহাড়ের চালকদের শিলিগুড়ি থেকে যাত্রী তুলতে বাধা দিতে শুরু করেছেন। সমাধান সূত্র খুঁজতে মঙ্গলবার জিটিএ প্রধান অনীত থাপা পাহাড়ের পরিবহণ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, বাগডোগরা, শিলিগুড়ি জংশন ও দার্জিলিং মোড় থেকে পাহাড়ের চালকেরা পর্যটকদের তুলতেন। এছাড়াও আগাম বুকিং থাকলে শহরের নানা হোটেল থেকে পর্যটক তুলেছেন।
সমতলের চালক সংগঠনের পক্ষে দেবাশিস মৈত্র বলেন, “পাহাড়ে উঠলেই হেনস্থা করা হচ্ছে। কোনও ট্যুরিস্ট পয়েন্টে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পাহাড়ের চালকদের সমতল থেকে যাত্রী তুলতে দেওয়া হবে না।” এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকরা বিপাকে পড়েছেন। এবার তাদের পাশে দাঁড়াতে দ্রুত ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে এনবিএসটিসি। ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম’-এর আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, “গাড়ি চালকদের সংঘাতের ফলে বিশ্রী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এনবিএসটিসি ‘টুরিস্ট ট্যাক্সি’র প্রচার বাড়ালে ওই সমস্যা অনেকটাই কাটবে।” এনবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, পাহাড়ের রুটে ৯টি সরকারি বাস চলছে। ‘ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি’ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনটি বাস ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি হিসেবে নামানো হবে।