• সরকারি নির্দেশিকা ‘অমান্য’, বহিরাগত পড়ুয়াদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি প্রধান শিক্ষিকার! শোরগোল মেদিনীপুরে
    প্রতিদিন | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সম্যক খান, মেদিনীপুর: প্রধান শিক্ষিকা সরকারি গাইডলাইন না মেনে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিচ্ছেন! অভিযোগ, স্কুল ক্যাম্পাসে চলা প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের ব্রাত্য রাখা হয়েছে। বদলে লটারি করে অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনই অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরের (Medinipur) অলিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

    অভিযোগ তুলেছেন স্কুলেরই পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সুব্রত সরকার। শুধু তাই নয় সরকার নির্ধারিত ফি-র বাইরে অতিরিক্ত টাকা ছাত্রীদের থেকে নেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুজাতা গোস্বামী বলেছেন, সরকারি গাইড লাইন ও বর্তমান পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। কোথাও কোনও বেনিয়ম হয়নি।

    জানা গিয়েছে, অলিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল ক্যাম্পাসে প্রাতঃবিভাগে দু’টি প্রাথমিক স্কুল চলে। একটি পুরোপুরি সরকারি। অপরটি বেসরকারি। যা একটা ট্রাস্টি দ্বারা পরিচালিত। বিগত বছরগুলিতে ওই দুই প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণি পাশ করা পড়ুয়ারা বাধাহীনভাবে সরাসরি হাই স্কুলে ভর্তি হয়ে যেতে পারত। কিন্তু এবার তা হয়নি। কিছুদিন আগেই স্কুলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত ও সরকারি নির্দেশিকা অনুসরণ করে অলিগঞ্জ বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি বিভাগের নির্দিষ্ট আসন সংরক্ষিত রেখে বাকি আসনগুলিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হবে। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?

    প্রধান শিক্ষিকা সুজাতাদেবী বলেন, “হাই স্কুল ক্যাম্পাসে চলা বেসরকারি ওই প্রাথমিক স্কুলের স্ট্যাটাস কি, তা জানতে চেয়ে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও উত্তর আসেনি। শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেসরকারি কোনও স্কুলের বিষয় তারা মতামত দেয়নি।” তিনি আরও বলেন, “অতীতে স্কুলগুলি ছিল সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত। পরিচালক সমিতি নিজেরাই অনেক কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারত। কিন্তু এখন স্কুলগুলি সরাসরি সরকারের অধীন। ফলে পরিচালন সমিতি থেকে ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ইতিমধ্যে বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের পক্ষ থেকে হাই স্কুলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। ফলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে সবকিছু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হচ্ছে।”

    স্কুল সূত্রে খবর, সরকারি প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণি পাশ করা ১০৩ জন পড়ুয়ার জন্য আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। বাকি প্রায় ৭০ টি আসনের জন্য লটারি করা হয়। এজন্য ২০৭টি আবেদন জমা পড়েছিল। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মদন মোহন মাইতিও বলেছেন, “শিক্ষাদপ্তর ও প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই নেওয়া হচ্ছে। কোনও পড়ুয়াকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখার অভিপ্রায় আমাদের নেই। বেসরকারি এই প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রীদেরও কীভাবে ভর্তির সুযোগ দেওয়া যায় সেই চেষ্টাও করা হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)