• শিলিগুড়ির নিরাপত্তায় বসবে আরও ক্যামেরা
    বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: চুরি থেকে ডাকাতি। হাত সাফাই থেকে ছিনতাই। নেপথ্যে স্থানীয় থেকে ভিনরাজ্যের গ্যাং। সেই সঙ্গে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের সন্দেহভাজন ‘স্পাই’-দের আনাগোনা! এমন প্রেক্ষাপটে ‘চিকেন নেক’ শিলিগুড়িতে বসছে আরও সিসি ক্যামেরা। বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভা, দার্জিলিং জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও এসজেডিএ বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রশাসনের বক্তব্য, শহর ও গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি ‘শ্যাডজোন’ মুড়ে দেওয়া হবে অত্যাধুনিক বুলেট, পিটিজেড ও নাইট ভিসন ক্যামেরায়। 

    উত্তরবঙ্গের ‘হৃদপিণ্ড’ শিলিগুড়ি শহরের পাশেই প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ও সিকিম। এই শহরের পাশেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও বাংলাদেশ। এখান থেকে চীন ও ভুটানের দূরত্বও বেশি নয়। 

    এমন ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি করিডরে প্রতিদিন নতুন নতুন লোকের অনাগোনা বাড়ছে। কেউ ব্যবসা, কেউ চিকিৎসা আবার কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য আসছেন। এঁদের ভিড়ে মিশে গিয়ে এখানে ঘাঁটি গাড়ছে ভিনরাজ্যের ছিনতাই, হাতসাফাই, এটিএম লুট ও ডাকাতির গ্যাং। সুযোগ বুঝে তারা অপারেশন চালিয়ে চম্পট দিচ্ছে। 

    শুধু তাই নয়, ফল বিক্রেতা, ভবঘুরে সহ বিভিন্ন ‘ছদ্মবেশে’ এখানে ঘাঁটি গাড়ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট চররা। ইতিমধ্যে এখান থেকে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন গ্রেফতারও হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে শিলিগুড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা চাঙ্গা করার দাবি বহুদিনের। সেজন্যই এদিন শহরের পূর্তদপ্তরের বাংলোয় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে এসজেডিএ। বৈঠকে পুরসভার মেয়র গৌতম দেব, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক মণীশ মিশ্র প্রমুখ ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা বৈঠকে শহরের শ্যাডজোনগুলিতে ক্যামেরা বসানো ও অত্যাধুনিক কন্ট্রোল রুম তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

    বৈঠকের পর মেয়র বলেন, শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে, বাজারে,  রাস্তায় আগেই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তা হলেও কিছু জায়গা এখনও ক্যামেরার বাইরে আছে। সেই জায়গাগুলিতে এবার ক্যামেরা বসানো হবে। এজন্য সার্ভে করে পুলিশকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। 

    এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান দিলীপ দুগার বলেন, শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাতেও বসানো হবে অত্যাধুনিক ক্যামেরা। পুলিশ, পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের সঙ্গে যৌথভাবে এই কাজ করা হবে। এতে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও চাঙ্গা হবে। 

    শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে শহরে পাঁচশোর বেশি ক্যামেরা আছে। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কারণে কিছু জায়গায় ক্যামেরা বিকল হয়ে গিয়েছে। কিছু জায়গা থেকে ক্যামেরা সরাতে হয়েছে। শীঘ্রই ওই জায়গাগুলি চিহ্নিত করা হবে। একইসঙ্গে তৈরি করা হবে অত্যাধুনিক কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে নজর রাখা যাবে গোটা শহরে। 

    শুধু শিলিগুড়ি নয়, জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি শহরেও বসানো হবে ক্যামেরা। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি এসএজডিএ’র অধীনে। এসজেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ওই শহরগুলিও সিসি ক্যামেরায় মোড়া হবে। এজন্য আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)