রামকুমার আচার্য, আরামবাগ: ভোটারের নাম ইংরেজিতে লেখা ‘ওয়াই এ ওয়াইএ’! ভোটারের বাবার নামও ‘ওয়াইএ ওয়াইএ’! এসআইআর পর্বে আরামবাগের ডিহিবায়রা গ্রামে এমন বহু ভোটারের নাম-বিভ্রাট হয়েছে। উদ্বিগ্ন সেখানকার ভোটারদের অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এমন প্রায় ৬৩ জনের নামের গোলমাল হয়েছে। কারও নামের বানান ভুল। কারও আবার নাম-পদবি দু’ইই অদ্ভুত। ইংরেজিতে লেখা ওয়াইএ ওয়াইএ!
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লক্ষ্মীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটারদের খসড়া তালিকা ঠিক রয়েছে। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ওয়েবসাইটের তথ্যে অনেকের নাম, পদবি বিভ্রাট হয়েছে। ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে এখনকার তালিকার ম্যাপিং করাতে গিয়ে এই বিভ্রাট নজরে পড়েছে নির্বাচন কমিশনের। তবে, ভোটাররা নিজেদের নথি বিএলও-র কাছে জমা দিচ্ছেন।’ আরামবাগের বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘এরকম কিছু বিষয় উঠে এসেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
ডিহিবায়রার ভোটার অনুপম কুন্ডুর নাম বিভ্রাট হয়েছে তালিকায়। তাঁর বাবার নামও এসেছে ত্রুটিযুক্ত। তার জেরে তিনি অসন্তুষ্ট। তিনি বলছেন, ‘বাবার নাম, দাদুর নামের জায়গায় ইংরেজিতে লেখা ওয়াইএ ওয়াইএ। বিএলও-র কথা মতো নথি জমা দিয়েছি। কিন্তু কেন এমন এল, তা বুঝতে পারছি না।’ আর এক ভোটার রয়েছেন বলরাম কুন্ডু। ওয়েবসাইটের তালিকায় তিনি দেখছেন পদবি হয়েছে ইংরেজিতে লেখা ওয়াইএ ওয়াইএ। তার জন্য বলরামবাবুর দুই ছেলের এসআইআরের প্রক্রিয়ায় ম্যাপিং হয়নি। ফলে ছেলেদের জন্ম শংসাপত্র, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডের প্রতিলিপি দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, বলরামবাবুর পদবি কুন্ডু। কিন্তু তাঁর রেশন কার্ডে রয়েছে ‘মুন্ডু’। পদবি সংশোধন করতে একাধিকবার তিনি আবেদন জানালেও এখনও হয়নি। বলরামবাবু বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় উদ্বেগে রয়েছি। চূড়ান্ত তালিকায় ঠিক হবে তো! মনে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’ বানান ভুলের সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার তরুণী ভোটার প্রীতি বিশ্বাসও। তিনি বুথ লেবেল অফিসারের কাছে নিজের নথি জমা দিয়েছেন।
তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রায় বলেন, ‘এসআইআর পর্বে মানুষের হয়রানির শেষ নেই। এখন আবার নাম, পদবি সংক্রান্ত নানা ভুলও দেখা যাচ্ছে। ২০০২ সালের এসআইআরের সময় তথ্য এন্ট্রি ভুল হয়েছিল বলে এখন ভোটারদের অস্বস্তি হচ্ছে। ফলে তাঁরা চিন্তায় পড়েছেন। কোনও বৈধ ভোটার যেন বাদ না পড়েন, আমরা সে দিকে নজর রাখছি।’ স্থানীয় সূত্রে খবর, অন্যান্য এলাকাতেও এমন সমস্যা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এআই-এর সাহায্যে ম্যাপিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সমস্যা ধরা পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এআই বাংলা হরফে লেখা নাম ও পদবি বুঝতে পারছে না। তাতেই বিভ্রান্তি। তবে, প্রয়োজনীয় নথি জমা করে সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে পারে। আশায় রয়েছেন ডিহিবায়রার বাসিন্দারা।