সংবাদদাতা, কাটোয়া : বড়দিনে কেক না পেলে ঠিক জমে না। নলেন গুড়ের কেক থেকে বেকারির কেক বাঙালির জিভে জল আনে। আউশগ্রাম জঙ্গলমহলে সরকারি ল্যাম্পস লিমিটেডের বেকারির কেকের চাহিদা ব্যাপক। এখানে তৈরি হচ্ছে বড়দিনের বিশেষ কেক।
শুধু জঙ্গলমহলেই নয়, আশপাশের শহরেও আউশগ্রামের বেকারির কেকের সুনাম রয়েছে। বহু শ্রমিক সেখানে কাজও করেন। তবে বেকারির পরিকাঠামো উন্নয়নে শ্রমিকরা আধুনিক প্রযুক্তি চাইছেন। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে কেক বানালে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আউশগ্রাম-২এর বিডিও চিন্ময় দাস বলেন, আমি নিজে ওই ল্যাম্পস লিমিটেডের কেকের বেকারি পরিদর্শন করেছি। কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য যা, যা প্রয়োজন আমরা তার প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম লিমিটেডের উদ্যোগে ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ আউশগ্রাম-২ ব্লক ল্যাম্পস লিমিটেড তৈরি করে। মূলত আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্যই এমন সমিতি তৈরি হয়েছিল। সুয়াতা গ্রামের ভিতরে প্রায় দু’বিঘা জমির উপর সমবায়টি গড়ে ওঠে। এই সমবায়ের অধীনেই রয়েছে বেকারি। এখানে পাউরুটি, বেকারির বিভিন্ন বিস্কুট থেকে বড়দিনের কেক তৈরি হয়। ময়দা, বাটার, কিসমিস, মোরব্বা, ডিম, চিনি এসব উপকরণ দিয়ে রকমারি বড়দিনের কেক তৈরি হয় এখানে। কিন্তু এই বেকারি এখনও সেই মান্ধাতা আমলের কাঠের চুল্লিতেই পড়ে রয়েছে। হাতেই ময়দার মণ্ড তৈরি করে ৯ জন কর্মী সারাদিনে প্রায় আড়াই থেকে তিন ক্যুইন্টাল কেক, বিস্কুট, পাঁউরুটি তৈরি করেন। এই বেকারির কেক আউশগ্রাম জঙ্গলমহল সহ মানকর, বুদবুদ, আসানসোল, দুর্গাপুরের শিল্পাঞ্চল বাজারগুলিতে সাপ্লাই দেওয়া হয়। কাজেই এখন নাওয়াখাওয়া ভুলে কর্মীরা কেক তৈরি করে চলেছেন৷
ল্যাম্পস লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার শুভতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমাদের সমিতির সবচেয়ে বড় আয় বেকারি থেকেই হয়। অন্য খরচা, কর্মীদের বেতন দিয়েও মাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। অথচ এই কারখানার পরিকাঠামোয় উন্নয়ন প্রয়োজন। কাঠের দাম বেড়েছে। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে বড় বেকারির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছি না আমরা। অথচ আমাদের কেকের চাহিদা ভালোই রয়েছে। বৈদ্যুতিক চুল্লি, রুটি, কেক সেঁকার ওভেন, আধুনিক মেশিন সহ অন্যান্য সরঞ্জাম প্রয়োজন। তা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও বেশি পরিমাণে কেক তৈরি করা যাবে। বেকারি কারখানার কর্মীরা বলেন, সারাদিনে ময়দা মাখাতে আর মণ্ড তৈরি করতে আমাদের যে সময় লাগে তাতে উন্নত প্রযুক্তি এলে সময় কম লাগবে। কেকের স্বাদও বদলে যাবে।
আউশগ্রামের ল্যাম্পস লিমিটেড সাতটি পঞ্চায়েতের একজন করে সদস্যদের নিয়ে তৈরি। বর্তমানে এই সমিতির অধীনে ২,৫০৪ জন সদস্য রয়েছেন। আউশগ্রামের সুয়াতা গ্রামে সরকারি কারখানায় তৈরি হচ্ছে কেক।-নিজস্ব চিত্র