• বছরে ১০৪ টাকার সম্পত্তি কর বেড়ে হল ৫২ হাজার! হরিদেবপুরে জমি নিয়ে অভিযোগ, মেয়রের নির্দেশে তদন্ত
    বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হরিদেবপুরের মতো জায়গায় প্রায় ৪৫ কাঠা জমি। অথচ বার্ষিক সম্পত্তি কর মাত্র ১০৪ টাকা! ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে এমন অভিযোগ শুনে পুরসভার সম্পত্তি কর মূল্যায়ন এবং রাজস্ব আদায় বিভাগকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেনকলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তদন্ত হতেই দেখা গেল, গত ১৫ বছর ধরে ওই সম্পত্তির কর পুনর্মূল্যায়ন করানো হয়নি। তাই পুরোনো হারেই রয়ে গিয়েছে কর। সেই সঙ্গে ওই সম্পত্তির রি-ভ্যালুয়েশন করা হয়। তারপর কর বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৫০০ গুণেরও বেশি। নয়া হারে ওই সম্পত্তির বার্ষিক করের পরিমাণ  দাঁড়িয়েছে নতুন প্রায় ৫২ হাজার টাকা।

    সম্প্রতি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বেহালা পূর্ব বিধানসভা এলাকা থেকে এই অভিযোগ আসে। হরিদেবপুর থানা এলাকার পশ্চিম পুটিয়ারির ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা ফোন করে বলেন, ‘সোদপুর ব্রিক ফিল্ড রোডে ৪৫ কাঠা জমির বার্ষিক সম্পত্তি কর মাত্র ১০৪ টাকা হতে পারে কীভাবে?’ অভিযোগ শুনে আকাশ থেকে পড়েন মেয়র! কীভাবে এত বড় সম্পত্তির কর এত কম হয়, তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। তারপর দেখা যায়, ওই সম্পত্তির ঠিকানা ৩৩, সোদপুর ব্রিক ফিল্ড রোড। যদিও সেখানে ৪৫ কাঠা জমি নেই। রয়েছে ২৬ কাঠা জমি। তাতেও কর ১০৪ টাকার অনেক বেশি হয়। বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকে ওই জমির রি-ভ্যালুয়েশন বা কর পুনর্মূল্যায়ন হয়নি। সেই কারণেই পুরোনো হারে রয়ে গিয়েছে ট্যাক্স। বিষয়টি সামনে আসতেই আধিকারিকরা নতুন করে ওই সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়ন করেন। তাতে বর্তমান বাজারদর অনুসারে ওই সম্পত্তির কোয়ার্টারলি (ত্রৈমাসিক) কর দাঁড়ায় প্রায় ১৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ বছরে প্রায় ৫২ হাজার টাকা। ১০৪ টাকার তুলনায় এই বৃদ্ধি ৫০০ গুণেরও বেশি। 

    যেখানে পুরসভা সম্পত্তি কর থেকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে উঠেপড়ে লেগেছে, সেখানে বছরের পর বছর কোনও জমি বা সম্পত্তির সঠিক কর মূল্যায়ন হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বলে মনে করছেন পুরকর্তারা। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বেহালা শাখার এক কর্তা বলেন, ‘ত্রুটি শুধরে নেওয়া হয়েছে। রিভ্যালুয়েশনের পর মালিককে শুনানির জন্য ডাকাও হয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে যে বকেয়া ছিল, সেটাও চাওয়া হবে।’ পুরসভা সূত্রে খবর, সেই বকেয়া করের পরিমাণই প্রায় ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। 

    উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিভিন্ন বৈঠকে মেয়র বারবার বলেছেন, শহরের সংযুক্ত এলাকা, বিশেষ করে বেহালা, কসবা, গরফা, জোকা, হরিদেবপুরের মতো অঞ্চলে এখনও নতুন নতুন বাড়ি, আবাসন তৈরি হচ্ছে। এসব এলাকায় নিয়মিত সম্পত্তিকে পুর-করের আওতাভুক্ত করার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। একটিও সম্পত্তি যেন করের আওতার বাইরে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই মতো মিউটেশনেও জোর দিচ্ছে পুরসভা।
  • Link to this news (বর্তমান)