সংবাদদাতা, বনগাঁ: শহরের কোলাহল ব্যস্ত জীবন থেকে নিরিবিলি শান্ত প্রকৃতিতে পা রাখা। সেখানে পাখির কলরব। হাজার হাজার গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে রোদের উঁকিঝুঁকি। জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতীর জলের স্রোত। সেখানে নৌকাবিহার এই শীতে অন্য অনুভূতি জাগিয়ে দেয় বাঙালির মনে। সবমিলিয়ে শীতের ঘোরাঘুরির অন্যতম জায়গা বাগদার পারমাদন ফরেস্ট। এটি বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত।
শীতের মরশুমে পর্যটনের অন্যতম ডেস্টিনেশন হিসেবে এখন সেজে উঠছে পারমাদন। বাগদার বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যের আয়তন ৯৩.৭ হেক্টর। এর মধ্যে ৬৪ হেক্টর জমি হরিণদের জন্য সংরক্ষিত। এখানে মূলত চিত্রা হরিণ দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রায় আড়াইশোরও বেশি হরিণ আছে। বিশাল জঙ্গলে ঘেরা পারমাদন অভয়ারণ্যে শিমুল, পলাশ, শিরীষ,অর্জুন ইত্যাদি গাছের সমারোহ। যা প্রকৃতিপ্রেমীরা খুবই পছন্দ করে। হরিণ ছাড়াও রয়েছে ময়ূর, বিভিন্ন ধরনের পাখি। তবে কয়েকটি অন্য অভয়ারণ্যে নিয়ে যাওয়ার কারণে ময়ূরের সংখ্যা কমেছে। সারাবছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। তবে শীতে পর্যটকদের ঢল নামে। বিশাল জঙ্গলের মধ্যে আছে বনভোজনের ব্যবস্থা। এটিও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পিকনিক করার নির্দিষ্ট জায়গা বনদপ্তর পরিষ্কার করে সাজিয়ে তুলেছে। তৈরি হয়েছে পর্যটকদের জন্য বসার জায়গা। শিশুদের খেলায় জায়গাও রয়েছে।
অভয়ারণ্যের অন্যতম মূল আকর্ষণ জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীতে নৌকাবিহার। নদীর পাড়ে রয়েছে নীলকুঠি। এটি পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওনা। নদীতে কচুরিপানা থাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে পর্যটকরা নৌকাবিহার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এবছর আগে থেকেই স্থানীয় মাঝিদের উদ্যোগে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছে। মাঝি নন্দ হালদার বলেন, ‘দু’বছর নদীতে কচুরিপানা ছিল। এবছর আমরা নিজেরাই পরিষ্কার করেছি। আশা করছি পর্যটকরা নৌকাবিহারে আনন্দ উপভোগ করবেন।’ জেলা বন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, পিকনিকের মরশুমে পর্যটকদের জন্য অভয়ারণ্য সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। পশু-পাখিদের যাতে অসুবিধা না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র