• আস্ত সংগ্রহশালা, ‘পুতুলের দেশ’ এবার ফিরিয়ে দেবে শৈশবের স্মৃতি
    বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জানা আছে? কলকাতায় আছে ‘পুতুলের দেশ’! শুনতে অবাক লাগলেও ময়দানের কাছে এক জায়গায় অবস্থিত এই ‘পুতুল রাজ্য’। হেঁয়ালি না করে খোলসা করে বললে, এক্সাইডের কাছে নেহেরু শিশু জাদুঘরে তৈরি হয়েছে পুতুলের সংগ্রহশালা। জাতীয় সাংস্কৃতিক সমিতি পরিচালনা করে। এই জাদুঘরের তিনটি তলা নির্দিষ্ট রয়েছে শুধুই পুতুলদের জন্য। যেখানে আছে দেশ-বিদেশের নানা ধরণের ডল, গণেশের নানা রূপের পুতুল এবং মূর্তির সংগ্রহ। পাশাপাশি পুতুল দিয়ে রামায়ণ ও মহাভারতের দৃশ্যগুলি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 

    এই পুতুলের দেশেই রয়েছে ৯৬টি দেশ ও ভারতের নানা রাজ্যের ১১০০ পুতুল। শুধু গণেশ মূর্তিই রয়েছে ৩১০টি। এই সংগ্রহের একটিতে আছে পুতুলের পুরুষ ও মহিলা জুটি-বিভিন্ন ভারতীয় রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। শাড়ি, ঘাগরা এবং ধুতি পরিহিত। এছাড়া পুতুলের শরীরে রয়েছে জটিল পুঁতির কাজ, সূক্ষ্ম নকশা সহ সেলাই, পুঁতির কাজ, আয়নার কাজ এবং টাই-ডাইয়ের নকশা যা বিভিন্ন অঞ্চলের সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। জার্মানি, আমেরিকা, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, জাপান, চিন, সুইজারল্যান্ড, সিরিয়া, স্পেন, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, পর্তুগাল, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল-আরও বহু দেশের নানা রকমের পুতুল আছে যা হাতে গুনে শেষ করা যাবে না। 

    পশ্চিমবঙ্গের পুতুলগুলিতে ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাকে বর-কনে, পুরুষের পোশাকে ‘পাঞ্জাবি’ এবং ঐতিহ্যবাহী ‘কোঁচকানো ধুতি’ এবং নারীর পোশাকে বাঙালি রীতিতে সাদা ও লাল শাড়ি রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলি সিল্ক এবং সুতির তৈরি। নকশায় সজ্জিত। এছাড়াও সংগ্রহের অংশ হিসেবে আছে ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্য যেমন, কথাকলির প্রতিনিধিত্বকারী পুতুল এবং গোয়ার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের পর্তুগিজ-অনুপ্রাণিত সমুদ্র সৈকতের পোশাকের মতো সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। জাদুঘরে আন্তর্জাতিক পুতুলের একটি ছোট সংগ্রহ রয়েছে। জাপানি পুতুলের সংগ্রহের মধ্যে রঙিন ঐতিহ্যবাহী জাপানি কিমোনোতে সজ্জিত, রঙিন হেড ড্রেস সহ আছে। হাকাতা নিংইও পুতুল জাপানের কিউশু অঞ্চলের ফুকুওকা শহরের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পের কথা বলে। চীনের পুতুলগুলিরও ঐতিহ্যবাহী পোশাক। তাদের অঞ্চলের অনন্য টুপি এবং গয়না, যার মধ্যে রয়েছে স্বতন্ত্র শৈলী, নকশা এবং রং ফুটে উঠছে।

    ভগবান গণেশকে নিয়ে রয়েছে পুতুলের আলাদা কক্ষ। জাদুঘরের গণেশ সংগ্রহে ঐতিহ্যবাহী রূপ থেকে শুরু করে মজাদার রূপ, যেমন গণেশ ফুটবল খেলছে। প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ, ভারতীয় মহাকাব্যের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি মাটির মূর্তি ব্যবহার করে পুনর্নির্মাণ। রামায়ণ ও মহাভারত ৬১টি পর্যায়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পুতুলগুলি দিয়ে মহাকাব্যগুলির এক একটি দৃশ্য পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। যা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে উপভোগ্য। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভালো ভিড় হয়। শীতে দিনে ১০০টি করে টিকিট বিক্রি হয়। আরও ৮০টি পুতুল স্টকে আছে। সেগুলিও শো-কেস করা হবে। ১৬ বছর বয়সিদের জন্য প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা এবং ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সিদের জন্য ২০ টাকা।
  • Link to this news (বর্তমান)