• উত্তর কলকাতায় লক্ষাধিক খরচে তৈরি ‘গ্রিন জোন’ দফারফা, জমছে আবর্জনা
    বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শোভাবাজার মেট্রো থেকে বি কে পাল অ্যাভিনিউ বা কুমোরটুলি যাওয়ার পথে অরবিন্দ সরণি (গ্রে স্ট্রিট)। সেই রাস্তায় ঢুকেই বাঁদিকে রয়েছে একের পর এক সিমেন্টের দোকান। তার সামনের ফুটপাতে সবুজায়ন হয়েছিল। তৈরি হয়েছিল ‘গ্রিন বাফার জোন’। কিন্তু, সেই ‘গ্রিন বাফার জোন’-এর বর্তমানে দফারফা অবস্থা। সিমেন্টের একাধিক দোকান থাকার কারণে সারাক্ষণই ওই এলাকায় সিমেন্ট উড়ছে। আর সেই কারণে অনেক গাছ মরে গিয়েছে। কোথাও কোথাও গাছের কোনও চিহ্নই নেই। সবুজায়ন রক্ষার জন্য যে বেড়া দেওয়া হয়েছিল, তাও জায়গায় জায়গায় ভেঙে পড়েছে। 

    শুধু অরবিন্দ সরণি নয়। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণির বিভিন্ন জায়গায় ছবিটা একই। কোথাও বাফার জোনে ছোটো ছোটো গাছের পাতায় ধুলো জমেছে। ধীরে ধীরে দুর্বল ও শীর্ণ হয়ে পড়ছে গাছগুলি। দেখেই বোঝা যায়, জল দেওয়া হয় না দিনের পর দিন। আবার বিভিন্ন জায়গায় এই ‘গ্রিন বাফার জোন’-এ পড়ে থাকছে প্লাস্টিকের প্যাকেট, চায়ের কাপ। গাছের হদিশ নেই। কোথাও কোথাও ফুটপাতের খাবারের দোকানের ভাতের গরম ফ্যান পড়ছে গাছগুলিতে। যদিও এই ছবি মূলত উত্তর কলকাতার। দক্ষিণ কলকাতায় এই ধরনের বাফার জোনগুলি অনেকটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে। ‘গ্রিন বাফার জোন’ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় সেই বাঁশের বেড়াগুলি উধাও। রক্ষণাবেক্ষণের চূড়ান্ত অভাব প্রকট বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে নাগরিকদের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছে। আশপাশের চায়ের দোকান বা খাবারের দোকানের কাপ, প্লেট ‘বাফার জোন’-এ ফেলে দেওয়া কিংবা গরম ভাতের মাড় গাছের উপর  ঢেলে দেওয়া নাগরিক উদাসীনতারই উদাহরণ। কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘বেশ কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলি আবার ঠিকঠাক করে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে।’ 

    বিভাগীয় সূত্রে খবর, শহরের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে যেখানে গ্রিন জোনগুলির বেহাল দশা, তার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলিকে নতুন করে বানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হবে তো? এক পুরকর্তা বলেন, ‘দক্ষিণ কলকাতায় রক্ষণাবেক্ষণ হয়, আর উত্তর কলকাতায় হয় না, এমন দাবি ভিত্তিহীন। সব জায়গাতেই মোটামুটি নিয়মিত জল দেওয়া হয়। কিন্তু আগে নাগরিককে সচেতন হতে হবে। বাফার জোনগুলি আবর্জনা ফেলার জায়গা নয়। আমরা যেমন নিজেদের বাড়িতে ইনডোর প্লান্ট মেইনটেইন করি, তেমনই রাস্তার গাছগুলিকেও সামলে রাখতে হবে। সেখানে নোংরা ফেললে চলবে না।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)