• বাংলাদেশ নিয়ে বিক্ষোভ সীমান্ত থেকে শহরাঞ্চলেও
    এই সময় | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু শ্রমিক দীপু দাসকে নৃশংস খুনের ঘটনার প্রতিবাদ ক্রমেই বাড়ছে এ রাজ্যে। গত দু’দিন ধরে কলকাতা, হাওড়া–সহ সীমান্ত এলাকাতেও ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বুধবার হিন্দু সনাতনী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ মিছিল হয় বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তে। কয়েকদিন আগেই পেট্রাপোল লাগোয়া বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে ভারত বিদ্বেষী স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল সে দেশের কট্টরপন্থীরা। এ দিন বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষায় বার্তা দিতে পাল্টা প্রতিবাদ মিছিল করেন হিন্দু সনাতনী ঐক্য পরিষদের সদস্যরা।

    এ দিন বনগাঁর জয়ন্তীপুর বাজার থেকে শুরু হয় প্রতিবাদ মিছিল। হিন্দু সনাতনী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এদিনের প্রতিবাদ মিছিলে হাজির ছিলেন হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার, বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। সীমান্তে গিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ চলাকালীন দুই দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বন্ধ ছিল। অসীম সরকার বলেন, ‘হিন্দুদের উপরে লাগাতার অত্যাচার হচ্ছে বাংলাদেশে। জেহাদিদের বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার না হলে, গোটা বিশ্বের কাছে তা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।’

    বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা স্থল বন্দরেও বিক্ষোভ দেখায় সনাতনী ঐক্য মঞ্চ। বিক্ষোভে দু’দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে। এ দিন সীমান্তের জ়িরো পয়েন্টের ২০০ মিটার আগে বসে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। সীমান্তে কড়া পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়।

    নিহত দীপু দাসের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরে জনসভা করে তিনি বলেন, ‘হিন্দুদের জনসংখ্যার হার কমছে বাংলায়। বাংলাকে কোনও ভাবেই বাংলাদেশ হতে দেওয়া হবে না।’

    একই কারণে এ দিন দুপুরে হাওড়া ব্রিজ অবরোধ করার চেষ্টা করে বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। কিন্তু হাওড়া ব্রিজে ওঠার আগেই বিজেপির মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে রাস্তার উপর বসে পড়েন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের একাংশ পুলিশের ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। তার জেরে হাওড়া ব্রিজ এবং তার আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

    এ দিন পুরাতন মালদা থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মুচিয়া গ্রামের শতাধিক সনাতনধর্মী ঢোল, করতাল নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মুচিয়া গ্রামের কাঁটাতারের বেড়া বরাবর প্রায় এক কিলোমিটার মিছিল করেন শতাধিক গ্রামবাসী। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, একজন সংখ্যালঘু যুবককে প্রকাশ্য রাস্তায় পিটিয়ে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়ার পরেও, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের সরকার এবং সেনাবাহিনী নিশ্চুপ।

    প্রতিবাদ হয় শিলিগুড়িতেও। ফুলবাড়িতে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যে ভাবে প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ হচ্ছে, ভারতবিরোধী মন্তব্য করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছি।’

  • Link to this news (এই সময়)