রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন্দ্র কিস্কু বুধবার রাতে বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। এই বাম নেতার দেহ বৃহস্পতিবার নিয়ে যাওয়া হয় সিপিএম-র বাঁকুড়া জেলা কার্যালয়ে।
সত্তরের দশকে বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় কেন্দু পাতা সংগ্রহ ও বিক্রির ন্যায্য মূল্য, বিড়ি শিল্পের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে জড়িত এবং শ্রমিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত অধিকার রক্ষার দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। ‘কেন্দু পাতা আন্দোলন’ হিসেবে পরিচিত সেই কর্মসূচির অন্যতম মুখ ছিলেন উপেন্দ্র কিস্কু। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক উত্থান হয়েছিল। পরবর্তীতে বাঁকুড়া জেলার বামপন্থীদের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক উপেন্দ্র কিস্কু।
১৯৭৭ সালে প্রথম রাইপুর বিধানসভা থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। টানা আটবার ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময়েও নিজের বিধানসভা থেকে নিকটতম প্রতিপক্ষকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। ১৯৮২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন উপেন্দ্র। দলের সর্বক্ষণের কর্মী হওয়ায় চাকরি ছেড়েছিলেন তিনি। ‘আদিবাসী অধিকার মঞ্চ’ তৈরির নেপথ্যে অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। মূলত তাঁর উদ্যোগে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে গ্রামে গ্রামে স্থাপিত হয় বহু সরকারি স্কুল ও আদিবাসী সমবায়। ২০১৬ সালের পর সরাসরি সংসদীয় রাজনীতিতে না থাকলেও শেষদিন পর্যন্ত দলের সঙ্গে ছিল নিবিড় যোগাযোগ। নিয়মিত যাতায়াত করতেন রাইপুরে সিপিএম-র দলীয় কার্যালয়ে।
পরিবার সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে বাড়িতে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে শুরু হয় তাঁর। বর্ষীয়ান এই নেতাকে বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।