উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সরব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার দিল্লি হাইকোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন। তার পরেই সামনে এসেছে উন্নাও কাণ্ডে নির্যাতিতাকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রীর মস্করা। কিন্তু BJP-র শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। গেরুয়া শিবিরের নীরবতাকেই তুলোধনা করেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘আজ বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বেটি বাঁচাও-এর বাস্তব চিত্র এটাই।’
২০১৭ সালে উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত কুলদীপ সেঙ্গারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের উপরে শর্তসাপেক্ষে স্থগিতাদেশের খবরে ভেঙে পড়েন নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের লোকজন। ইন্ডিয়া গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কিন্তু নির্যাতিতা এবং তাঁর মাকে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রীতিমতো হাসিতে ফেটে পড়েন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওপি রাজভড়। নির্যাতিতা এবং তাঁর মাকে নিয়ে ঠাট্টা করে বলেন, ‘কিন্তু ওঁর বাড়ি তো উন্নাওয়ে... ইন্ডিয়া গেটে কী করছিল!’ এই ঘটনার প্রতিবাদেই সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নাও ধর্ষণে দোষী বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে গেরুয়া শিবিরের নীরবতাকেই নিশানা করেছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লিখেছেন,‘ধর্ষণ অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বিজেপির মিত্র উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভার ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে নিয়ে উপহাস করেছেন।’
এখানেই শেষ নয়, ‘বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। একইসঙ্গে ন্যায়বিচার খোঁজা পরিবারগুলির হতাশাকেও তুলে ধরেছেন তিনি। আক্রমণের শান আরও বাড়িয়ে অভিষেক লিখেছেন,‘আজ বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বেটি বাঁচাও’-এর বাস্তব চিত্র এটাই। যখন দোষী সাব্যস্ত ধর্ষকরা ঘুরে বেড়ায় এবং মন্ত্রীরা উপহাস করেন, তখন বুঝতে হবে, প্রতিটি কন্যা, প্রতিটি নারী এবং ন্যায়বিচার খোঁজা প্রত্যেক পরিবার ব্যর্থ।’
উল্লেখ্য, উন্নাওয়ের নাবালিকাকে চাকরি দেওয়ার নামে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত। মঙ্গলবার সেই সাজাতেই স্থগিতাদেশ দেয় দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রহ্মণিয়াম এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ।
ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। তিনি বলেন,‘এমন একটি মামলায় যদি দোষী জামিন পেয়ে যান, তা হলে দেশের মেয়েদের নিরাপত্তা কে দেবে?’ দিল্লি হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে সিবিআই। তবে কবে আবেদন জানানো হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।