• পৌষমেলার ভিড় সামলাতে পূর্ব রেলের বিশেষ ট্রেন
    আজকাল | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েডেস্ক: ইংরেজি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিনটা ২৫ ডিসেম্বর হলেও বাংলা ক্যালেন্ডারের হিসেবে বৃহস্পতিবার, ৯ পৌষ। শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার তৃতীয় দিন। মেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন শান্তিনিকেতনে। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের সঙ্গে মেলার আনন্দ উপভোগ করতে। হস্তশিল্পের স্টল, লোকশিল্প, খাবারের দোকান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর গোটা মেলা প্রাঙ্গণ। এই বিপুল ভিড় সামলানো এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখার লক্ষ্যেই পূর্ব রেলের তরফে চালু করা হয়েছে পৌষমেলা স্পেশাল ট্রেন।

    রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া-বোলপুর রুটে এই বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছেড়ে ব্যান্ডেল, বর্ধমান ও গুসকরা স্টেশনে থামবে এবং তারপর বোলপুর শান্তিনিকেতনে পৌঁছবে। মোট ১১টি কোচ নিয়ে গঠিত এই ট্রেনে রয়েছে ৯টি সাধারণ বগি ও ২টি সংরক্ষিত বগি। ফলে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ যাত্রীদের জন্য এই ট্রেন বিশেষ সুবিধাজনক বলে মনে করছেন অনেকেই।

    রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ট্রেনটি হাওড়া থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে বোলপুরে পৌঁছবে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে। আবার বোলপুর থেকে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে হাওড়ায় পৌঁছবে। মেলার দিনগুলিতে বাড়তি যাত্রী চাপ সামাল দিতেই এই বিশেষ পরিষেবা চালু করা হয়েছে।

    উল্লেখযোগ্যভাবে, পৌষমেলা শুরু হলেও প্রথম দিকে কোনও বিশেষ ট্রেন পরিষেবা না থাকায় পর্যটক ও মেলা-প্রেমীদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। তবে দেরিতে হলেও এই বিশেষ ট্রেন চালু হওয়ায় পর্যটক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

    https://m.

    এদিন ওই স্পেশাল ট্রেনে যাত্রা করে বর্ধমান থেকে শান্তিনিকেতনে এসেছেন মোনালিসা হাজরা নামের এক তরুণী। তিনি বলেন, "স্পেশাল ট্রেনের বিষয়ে জানতাম না, স্টেশনে এসে জানতে পারি। এটা আমাদের কাছে খুব ভাল একটা সারপ্রাইজ। ট্রেনটিও খুব ভাল। আরামদায়ক যাত্রা হয়েছে, কোনও অসুবিধা হয়নি। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ তুলনামূলক ভিড় কম ছিল।"

    মেমারির দেবীপুর থেকে আগত উদ্দীপ্ত ঘোষও পূর্ব রেলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "শান্তিনিকেতনের মেলা ঘুরতে এসেছি দু'দিনের জন্য। স্পেশাল ট্রেনটি পেয়ে আমরা অত্যন্ত অভিভূত। ভিড়ে ঠাসাঠাসির বদলে আরামদায়কভাবে আসতে পেরে আমরা অত্যন্ত খুশি। এর জন্য পূর্ব রেলকে ধন্যবাদ জানাই।"

    বস্তুত, পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে শান্তিনিকেতনের প্রায় সব হোটেল, লজ ও গেস্টহাউস পুরোপুরি বুকিং হয়ে গিয়েছে। থাকার জায়গা না পাওয়ায় বহু পর্যটক মেলা দেখে সেই দিনই ফিরে যাচ্ছেন। সেই ক্ষেত্রে এই বিশেষ ট্রেন পরিষেবা তাঁদের কাছে বিশেষ সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। সকালে এসে মেলা ঘুরে, কেনাকাটা ও অনুষ্ঠান দেখে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা।

    মেলা প্রাঙ্গণে উপচে পড়া ভিড়, হোটেল বুকিংয়ের চাপ এবং ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যেও পর্যটকদের উৎসাহে কোনও ভাটা পড়েনি। বরং রেলের এই উদ্যোগে আগামী দিনগুলিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন মেলার হস্তশিল্পী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মানুষজন।
  • Link to this news (আজকাল)