• বঙ্গে এসআইআর: ৪৬০০ মাইক্রো অবজার্ভারকে প্রশিক্ষণ
    আজকাল | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় প্রথম দফা অর্থাৎ এনুমারেশন পর্ব শেষ। শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ শুনানি পর্ব। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর ভোটার তালিকা সংশোধন ও নতুন নাম অন্তর্ভুক্তির শুনানি পর্বে স্বচ্ছতা ও গতি নিশ্চিত করতে কড়া নজরদারির পথে হাঁটল নির্বাচন কমিশন। ভোটারদের শুনানি চলাকালীন কীভাবে নজরদারি চালাতে হবে, তা নিয়ে মাইক্রো অবজার্ভারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিল কমিশন। এই মাইক্রো অবজার্ভাররা প্রত্যেকেই কেন্দ্রীয় সরকারি কিংবা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী, যাঁদের ওপর ভরসা রেখেই শুনানি পর্বে কড়া পাহারা বসাচ্ছে কমিশন।

    বুধবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে দু’দফায় এই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। প্রথম দফার প্রশিক্ষণ চলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে, দ্বিতীয় দফা শুরু হয় দুপুর ২টো থেকে। এদিন প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়াল, বিশেষ পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত-সহ সিইও দফতরের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

    মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তর (সিইও) আগেই জানিয়েছিল, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতে ভোটারদের শুনানি পর্বে থাকছে ১০-১১টি করে কক্ষ। এই প্রত্যেকটি কক্ষই থাকবে একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত এবং এই কক্ষগুলির প্রতিটিতে একাধিক টেবিল বা বেঞ্চ থাকবে। প্রতিটি টেবিল বা বেঞ্চে শুনানি প্রক্রিয়ার উপর নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন একজন করে মাইক্রো অবজার্ভার। প্রশিক্ষণ পর্বে ৪৬০০ জন মাইক্রো অবজার্ভারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং কিভাবে কী কী কাজ করতে হবে। এনুমারেশন ফর্ম কীভাবে যাচাই করতে হবে, ভোটারদের জমা দেওয়া নথিপত্র কীভাবে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে হবে এবং শুনানি চলাকালীন কোন কোন বিষয়ের উপর বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন।

    ভোটার শুনানির মূল দায়িত্বে থাকছেন ইআরও এবং এইআরও আধিকারিকরা। তবে গোটা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার জন্য মাইক্রো অবজার্ভারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকছে। কমিশনের তরফে তাঁদের উপর মোট ৯টি নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে-

    ১. বিএলও-দের জমা দেওয়া ডিজিটাইজড এনুমারেশন ফর্মের তথ্য যাচাই

    ২. জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত নথির সঙ্গে ভোটার তালিকার তথ্য মিলিয়ে দেখা

    ৩. ইআরও বা এইআরও-দের পাঠানো নোটিশের ভিত্তিতে ভোটারদের জমা দেওয়া নথি পরীক্ষা

    ৪. ভোটারদের দাবির সঙ্গে জমা দেওয়া নথির সামঞ্জস্য যাচাই

    ৫. শুনানি পর্বের সামগ্রিক প্রক্রিয়ার উপর কড়া নজরদারি

    ৬. ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম বা বিচ্যুতি হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা

    ৭. পর্যবেক্ষক ও বিশেষ পর্যবেক্ষকদের পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে সহায়তা করা

    ৮. সিইও বা বিশেষ পর্যবেক্ষকদের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন

    ৯. নজরদারির ভিত্তিতে উঠে আসা তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করা

    নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী শনিবার থেকেই রাজ্যে ভোটারদের শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। কোনও ভোটারের নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে কি না, তা অনেকটাই নির্ভর করবে এই শুনানির উপর। সেই কারণেই নির্বাচন কমিশন দ্বারা নিযুক্ত ৪৬০০ জন মাইক্রো অবজার্ভারদের শুনানি পর্বের পূর্বেই প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। শুনানি প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে কড়া নজর রাখছে নির্বাচন কমিশন। লক্ষ্য একটাই, এক মাসের মধ্যেই নির্ভুল ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রকাশ।
  • Link to this news (আজকাল)