উন্নাও ধর্ষণ মামলার নির্যাতিতা ফের গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার যেকোনো জায়গায় পৌঁছে তাঁকে হত্যা করতে পারেন। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ জানিয়ে তিনি কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে স্থানান্তরের আবেদন করেছেন। পাশাপাশি দিল্লিতে তাঁর বিক্ষোভকে উপহাস করা উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভরকে বরখাস্ত করার দাবিও তুলেছেন তিনি।
এই সপ্তাহের শুরুতে দিল্লি হাইকোর্ট কুলদীপ সেঙ্গারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড স্থগিত করার পর থেকেই ফের আলোচনায় এসেছে মামলাটি। যদিও নির্যাতিতার বাবার হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ১০ বছরের সাজা থাকায় আপাতত সেঙ্গার জেলেই রয়েছেন। বুধবার নির্যাতিতা ও তাঁর মা ইন্ডিয়া গেটে বিক্ষোভ দেখান এবং কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন।
২০১৭ সালে ঘটনার সময় নাবালিকা থাকা ওই তরুণী ইন্ডিয়া টুডেকে জানান, রাহুল গান্ধী তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন এবং সুপ্রিম কোর্টে সেঙ্গারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শীর্ষ আইনজীবীর সহায়তা নেওয়ার কথাও বলেছেন। বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও দায়ের করা হয়েছে।
নির্যাতিতার কথায়, 'আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তার পর আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। ২০১৯ সালে আমাকে খুন করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনার নাটক করা হয়েছিল। আজও আমি নিরাপদ নই।' তিনি আরও বলেন, আদালতের শর্ত থাকলেও তাঁর আশঙ্কা কাটছে না। তাঁর দাবি, সেঙ্গার নিজের প্রভাব খাটিয়ে অনুচরদের দিয়ে তাঁকে যেকোনো জায়গায় খুন করাতে পারে।
তিনি বলেন, 'আমি প্রতিদিন ভয়ের মধ্যে বেঁচে আছি। আমার স্বামী কাজে যেতে পারছেন না, ফলে সংসার চালানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। আমার দুই ছোট সন্তান আছে, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও আমি আতঙ্কে রয়েছি।'
এদিকে দিল্লিতে বিক্ষোভ চলাকালীন নির্যাতিতাকে পুলিশ টেনে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভরের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজভর হাসতে হাসতে বলেন, 'ইন্ডিয়া গেট কেন? ঘর তো উন্নাওতে।'
এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নির্যাতিতা বলেন, 'একজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে হাসতে হাসতে এমন কথা বলতে পারেন, এটাই লজ্জার। একজন ধর্ষণ অভিযুক্তকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করার অধিকার তাঁর নেই।' তিনি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে রাজভরকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের দাবি জানান।
বিষয়টিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এক্স-এ করা একটি পোস্টে তিনি এই ঘটনায় বিজেপি নেতৃত্বের নীরবতা এবং তাদের সহযোগী দলের মন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন।