• পাহাড়ে শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ ডিভিশন বেঞ্চের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে জিটিএ। মঙ্গলবারেই জিটিএ-র তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে এবং সেকারণেই বিষয়টা পুনর্বিবেচনা করা দরকার। জিটিএ-র তরফে করা সেই মামলার শুনানিতে বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরী রায় দিয়েছেন। এদিন ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই শিক্ষকরা দীর্ঘদিন চাকরি করছেন।

    সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে এই বিষয়টি ভেবে দেখা হয়নি। শুধু তাই নয় ডিভিশন বেঞ্চের আরও বক্তব্য, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবং অন্যান্য কারণে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ছিল। এই বিষয়টিও বিবেচনা করেনি সিঙ্গেল বেঞ্চ। তারপরই সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। আপাতত, ১২ সপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে বলে খবর। পাশাপাশি রাজ্য সরকার ও মামলাকারীদের হলফনামা পেশের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।

    এদিন মামলার শুনানিতে জিটিএ-র পক্ষে আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার বলেন, ‘জিটিএ-তে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিয়োগ সম্ভব হয়নি। এই ৩১৩ জন অস্থায়ী শিক্ষক দীর্ঘ ১০ থেকে ১২ বছর ধরে পরিষেবা দিয়েছেন| তাঁদেরকে চাকরিতে স্থায়ী করা হয়েছিল রাজ্যের নোটিসের ভিত্তিতে। এই মূহূর্তে তাঁদের চাকরি বাতিল করা হলে, একাধিক স্কুলে সমস্যা তৈরি হবে ৷ কারণ, বিভিন্ন স্কুলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৷ তখন সমস্যায় পড়বে স্কুলগুলি।’

    গত ১৭ ডিসেম্বর, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চে পাহাড়ে দুর্নীতি মামলার শুনানি হয়েছিল। বিচারপতি নির্দেশ দেন, ৩১৩ জন শিক্ষকের চাকরি আর থাকবে না। এছাড়াও এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিআইডি তদন্ত চলবে বলেও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করেই তদন্ত চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তদন্তের মাধ্যমে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার সত্যতা সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    জিটিএ আওতাভুক্ত এলাকায় শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগে সিবিআই-কে অনুসন্ধান করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে দিতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু সেখানে ধাক্কা খেতে হয় রাজ্য সরকারকে। ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখে। এরপরেই এই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। যদিও ফের সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলাটি ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)