শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বদলির দিনই লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার দায়ে ধরা পড়লেন পোস্ট মাস্টার। গ্রাহকদের গচ্ছিত কয়েক লক্ষ টাকা তছরূপের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির দক্ষিন ভুষকাডাঙা পোস্ট অফিসে। পোস্ট মাস্টারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুরু হয়েছে অডিট।
বেশ কয়েকবছর আগে ময়নাগুড়ির দক্ষিণ ভুষকাডাঙা পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার হিসাবে দায়িত্ব নেন সাগ্নিক রায়। সম্প্রতি তাঁর বদলির নির্দেশ আসে। সেই মোতাবেক বুধবার ভুষকাডাঙা পোস্ট অফিসে শেষ দিন ছিল তাঁর। এদিকে বেশ কিছুদিন ধরেই গ্রাহকরা লক্ষ্য করছিলেন, তাঁদের অ্যাঙ্কাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হচ্ছে। মোবাইলে টাকা তোলার মেসেজ আসছিল। কিন্তু পোস্ট অফিসে পাসবুক আপডেট করতে গেলে মাস্টার লিঙ্ক নেই বলে বারবার তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
বুধবার বদলির দিনেই পোস্ট মাস্টারের জালিয়াতি ধরে তাঁকে আটকে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা। খবর পেয়ে ছুটে আসে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। চাপের মুখে পোস্ট মাস্টার কয়েকজনের টাকাও ফেরান বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে ডাক বিভাগ। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অভিজিৎ সরকার নামে এক গ্রাহক জানান, “বেশ কয়েক দিন ধরেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে বলে ম্যাসেজ আসছিল। সন্দেহ হওয়ায় পোস্ট অফিসে এসে পাশবই আপডেট করতে চাইলে লিঙ্ক নেই বলে টাল বাহানা করতে থাকেন মাস্টার।” একই অভিযোগ আরও এক গ্রাহক সরস্বতী সরকারের। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
গ্রামের বহু মানুষ এই পোস্ট অফিসের উপর নির্ভরশীল। ঘটনা সামনে আসতেই দুশ্চিন্তায় পড়েন গ্রাহকেরা। বুধবার সকলে একজোট হয়ে পোস্ট মাস্টারকে ঘেরাও করেন। অভিযোগ, টাকা জমা রাখা ও তোলার সময় গ্রাহকদের ভুল বুঝিয়ে একাধিক জায়গায় সই করিয়ে নিতেন পোস্ট মাস্টার সাগ্নিক। তারপর সেই টাকা আত্মসাৎ করতেন। ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ জানান, “লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ডাক বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে।” কোথায় কত গড়মিল হয়েছে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।