শিল্পের জন্য ২০০ একর জমি বরাদ্দ, বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়বে জিন্দাল, সিঙ্গুরেও বড় প্রকল্পের জমি
বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নতুন শিল্পের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০০ একর জমি বরাদ্দ করা হল। বুধবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিল্প সংক্রান্ত একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, জেএসডব্লু (জিন্দাল) শিল্পগোষ্ঠী মোট ১৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার (৮০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট) নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হবে হুগলি জেলার সিঙ্গুরে। সেখানে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নাহার ইন্ড্রাস্টিয়াল এন্টারপ্রাইজ ওয়্যারহাউজিং প্রকল্প তৈরি করবে। সেখানে নামী ই-কমার্স সংস্থার জন্য পণ্য মজুত ও প্যাকিং করা হবে। এই ধরনের প্রকল্পে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রথম সিঙ্গুরে বড় কোনও প্রকল্প হতে চলেছে সেখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, সম্প্রতি শিল্প কনক্লেভে ওই সংস্থা প্রকল্পটি করার কথা জানিয়েছিল। ওই সংস্থার কাছে সেখানে সিলিংবহির্ভূত ১১.৩৫ একর জমি ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ওই জমি সরকার ‘ভেস্ট’ করে প্রয়োজনীয় ফি নিয়ে তাদের দেবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে কলকাতার মাদার ডেয়ারিকে ‘বাংলার ডেয়ারিতে’ রূপান্তরিত করার জন্য শেষ আইনি প্রক্রিয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাদার ডেয়ারির ডানকুনি প্ল্যান্টে উৎপাদিত দুধ ও অন্যান্য দুগ্ধজাত সামগ্রী বাংলার ডেয়ারি নামে ইতিমধ্যেই বাজারে এসে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ৫১টি নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
জিন্দাল শিল্প গোষ্ঠী পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে বড় ইস্পাত কারখানা গড়ছে। তবে নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্পটি কোথায় হবে, তা এখনও জানানো হয়নি। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন,বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি জিন্দাল গোষ্ঠী নিজে কিনে নেবে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) এই প্রকল্পটি করার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। উৎপাদিত বিদ্যুতের সবচেয়ে কম মাশুল (প্রতি কিলোওয়াটের জন্য ৫ টাকা ৮১ পয়সা) ধার্য করে তারা টেন্ডারটি পেয়েছে। এই প্রকল্পটির জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে জিন্দালদের ২৫ বছরের চুক্তি হবে।
এগুলি ছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় শিল্প ইউনিট গড়ার জন্য মোট চারটি প্লটে জমি বরাদ্দ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে জঙ্গলসুন্দরী শিল্পতালুকে ১৫৫ একর জমির একটি প্লট বরাদ্দ করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুরে বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে ৩০.৩২ একর জমির প্লট, পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় শিল্পতালুকে ১.৩৭ একর জমির প্লট এবং নদীয়ার হরিণঘাটার শিল্পতালুকে ২.৭৭ একর জমির প্লট দেওয়া হয়েছে।
হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের সম্প্রসারণের জন্য ০.৫ একর জমি বরাদ্দ করেছে মন্ত্রিসভা। সেখানে কারিগরি শিক্ষাদপ্তরের যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি আছে সেটিও চলবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের অফিস চালানোর জন্য ২০৮৪ বর্গফুট জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, দুর্গাপুরের কোক ওভেন থানার গোপীনাথপুর মৌজার ৩.০৩ একর জমি একটি ইস্পাত উৎপাদনকারী বেসরকারি সংস্থাকে ৯৯ বছরের লিজে দেওয়া হবে। জমিটি এডিডিএ’র।