নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত সপ্তাহে বণিজ্য সম্মেলনে জিএসটি নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকেই কার্যত তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, অমিতবাবুর কথাতেই তিনি জিএসটি ব্যবস্থায় রাজি হয়েছিলেন। তার খেসারত রাজ্যকে দিতে হচ্ছে। কারণ, নতুন যে জিএসটি কাঠামো তৈরি হয়েছে, তাতে রাজ্যের বার্ষিক রাজস্ব ক্ষতি হবে ২০ হাজার কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী যে সেদিন ভুল কিছু বলেননি, বুধবার তারই ব্যখ্যা দিলেন অমিতবাবু। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘জিএসটির অব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ সঙ্গত। তিনি বলেছিলেন, আমি তাঁকে জিএসটিতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। কেন আমি তা করেছিলাম? ২০০৯ সালে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলাম, এমএসএমই সেক্টরকে ১৭টি কর ব্যবস্থা অক্টোপাসের মতো চেপে ধরছে। সেন্ট্রাল এক্সাইজ, সার্ভিস ট্যাক্স, সারচার্জের মতো বিভিন্ন কর ছিল ভ্যাট জমানায়। সেক্ষেত্রে জিএসটির মতো একটিমাত্র কর ব্যবস্থা যদি সুষ্ঠু ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার সঙ্গে আনা যায়, তাহলে ছোটো শিল্পের প্রসার হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু এমএসএমই নিয়ে ভাবেন, তাই তিনি জিএসটিতে রাজি হন। এর আট বছর পরে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে প্রচারমুখী কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি ব্যবস্থা চালু করে দেয়, যখন কম্পিউটার সিস্টেমই তৈরি ছিল না এই কর ব্যবস্থার জন্য। জিএসটি নেটওয়ার্ককে সেই সময় ৩০০ কোটি ইনভয়েস প্রসেস করতে হত এবং প্রতি মাসে আপলিংক করতে হত। জিএসটি নেটওয়ার্ক এই কাজে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। এখনও পর্যন্ত জিএসটি ব্যবস্থায় ৯৫৫টি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, ৭৫৪টি সার্কুলার এবং ১৯২টি ফর্ম এসেছে। সেন্ট্রাল জিএসটি আইনে ৮৬টি এবং বিধিতে ১৪৭টি সংশোধনী এসেছে। ২ লক্ষ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে, দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই। দমবন্ধ পরিস্থিতি আবার ফিরে এসেছে ছোটো শিল্পে। অযোগ্য, অপদার্থ কেন্দ্রই এর জন্য দায়ী। এর থেকেই বোঝা যায়, কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ। কারণ, এমএসএমই দেশের ৯২ শতাংশ ব্যবসা ধরে রাখে।’