এই সময়, খড়্গপুর: প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে জল নিয়ে এসে কোনও রকমে দিন কাটছে এলাকার মানুষের। স্নান, বাসন ধোয়া, জামা কাপড় কাচা থেকে বাথরুমের জন্য গ্রামের পুকুরের নোংরা জল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। দু'মাস ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে সাব মার্সিবল পাম্প। ফলে মিলছে না পানীয় জল! গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডেবরা ব্লকের ট্যাবাগেড়িয়া এলাকার গৌরাঙ্গচক গ্রামের বাসিন্দারা।
ডেবরার বিডিও প্রিয়ব্রত রাঢ়ী বলেন, 'সমস্যার কথাটি সবে শুনেছি। বিকল সাব মার্সিবল পাম্পটি দেখার জন্য লোক পাঠিয়েছি। দু-একদিনের মধ্যে সেটি ঠিক করা হবে।' গৌরাঙ্গচক গ্রামে প্রায় ১০০টি পরিবারের বাস। এক সময়ে গ্রামে একটি নলকূপ ছিল। কিন্তু সাব মার্সিবল বসিয়ে গ্রামে পাইপ লাইনে জল সরবরাহ চালু হওয়ার পরে তার কদর ছিল না। ফলে সেটিও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন।
এমন সময়ে প্রায় দু'মাস হলো হঠাৎ সাব মার্সিবল পাম্পটি বিকল হয়ে পড়ে। তারপর থেকে গ্রামবাসীদের জল আনতে যেতে হয় প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অঞ্চল অফিস থেকে। ষাটোর্ধ্ব অলোকা পাত্র বলেন, 'এই বৃদ্ধ বয়সে এত দূর থেকে জল এনে কার মুখে দেবো। প্রতিদিন কী এত কষ্ট করা যায়। তা ছাড়া বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা, স্নান করা, বাথরুমের জন্যও তো জলের প্রয়োজন। বাধ্য হয়ে পুকুরের নোংরা জলই ব্যবহার করছি।'
গ্রামের বাসিন্দা শেখর মাইতি বলেন, 'প্রশাসনকে জানিয়েও সুফল না মেলায় বাধ্য হয়ে অকেজো নলকূপটি গ্রামের মানুষ চাঁদা দিয়ে সারিয়েছি। যাতে পানীয় জলটুকু পাই। কিন্তু একটি নলকূপের জলে তো স্নান, কাপড় কাচা বা অন্য কাজ করা যায় না। তাতে যদি আবার সেটি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পুকুরের নোংরা জল ব্যবহার করতে হচ্ছে।' এই পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাঁদের অভিযোগ, এই গ্রামে সাধারণ গরিব মানুষের বসবাস বলে প্রশাসন এত উদাসীন। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থাকলে হয়তো দু-একদিনেই পাম্প ঠিক করে দিত প্রশাসন।