নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ২৫ ডিসেম্বর, বড়দিন উপলক্ষ্যে গির্জায় হাজির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনের পূর্বদিকে ১ নম্বর নর্থ অ্যাভিনিউয়ের ক্যাথিড্রাল চার্চ অব রিডেমশনে যান তিনি। যিশুর জন্মদিনে বিশেষ প্রার্থনায় হাজির হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান চার্চ কর্তৃপক্ষ। গির্জায় যাওয়ার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। মোদিকে নিশানা করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল—উভয় শিবিরই। দুই বিরোধী দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং পবন খেরার বক্তব্য, মনে সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে ঘৃণা আর মুখে লোকদেখানো ভক্তি কেন? আগামী বছর কেরলে নির্বাচন। তাই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষজনের মন জয়ের উদ্দেশ্যেই প্রধানমন্ত্রী গির্জায় গিয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।
গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বড়দিনের উৎসবে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের খবর সামনে এসেছে। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে দৃষ্টিহীন খ্রিস্টান মহিলাকে বিজেপি নেত্রী হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। একইভাবে ছত্তিশগড়ের ম্যাগনেটো মলের সামনে সান্তাক্লজের মূর্তি ভাঙা থেকে শুরু করে বড়দিনের উৎসব পালনের প্যান্ডেল তছনছ করার ভিডিও সামনে এসেছে। হিন্দু ধর্মের নাম করে কোথাও খ্রিস্টানদের বড়দিন পালনে বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ।
এই সমস্ত ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর তোপ, গির্জায় যাওয়া কি আদৌ ভালোবাসা? শান্তি, আবেগ, সৌহার্দ্য? এই সমস্ত হামলার কথা জানার পরেও কেন চুপ নরেন্দ্র মোদি? কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান পবন খেরার প্রশ্ন, কেন এই দ্বিচারিতা প্রধানমন্ত্রীর? মোদিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি বলেন, রাম নবমী হোক হনুমান জয়ন্তী, বিজেপি-আরএসএস আশ্রিত একদল গুণ্ডা মসজিদের সামনে গিয়ে জোরে জোরে বক্স বাজাচ্ছে। হনুমান চালিশা পড়ছে। উস্কানিমূলক আচরণ করছে। এরা কী করে নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করে? স্বামী বিবেকানন্দ পর্যন্ত যিশুর জন্মদিনে উৎসব পালন করেছেন। সেই পথ অনুসরণ করে আজও দেশ-বিদেশের রামকৃষ্ণ মিশনে বড়দিন যিশু পুজো হয়। আর সেখানে হিন্দু ধর্মের নামে এভাবে খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার হচ্ছে? তা দেখেও প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন, প্রশ্ন পবন খেরার।