বেঙ্গালুরু: তখন রাত ২টো। কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগিয়ে চলেছে একটি বিলাসবহুল বাস। উল্টো দিক থেকে তখন ডিভাইডার টপকে সেই একই লেনে এসে পড়েছে একটি ট্রাক। সেই ট্রাকটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। নিমেষে ঝলসে মৃত্যু হল ১০ জনের। ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে মৃতদের পরিবারবর্গকে একককালীন ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে জখমদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে মোদি জানিয়েছেন। দুর্ঘটনা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ৩২ জন যাত্রী নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের দিকে যাচ্ছিল দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। ৩০০ কিলোমিটার পার করে হিরিউর তালুকের কাছে গোরলাথু গ্রামের কাছে বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্রাকটি সরাসরি ধাক্কা মারে বাসটির তেলের ট্যাঙ্কারে। এরপরেই বাসটিতে আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। ভোররাতে ঘুমিয়ে থাকায় যাত্রীদের অনেকেই বেরনোর সুযোগ পাননি। বিকট আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে দরজা দিয়ে লাফ দেন তাঁরা। ন’জনের কোনও ক্ষতি হয়নি। বাকিদের হিরিউর, চিত্রদুর্গ এবং শিরার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। বাসের চালক এবং খালাসি বেরিয়ে আসতে সমর্থ হন। তবে ট্রাকের চালক এবং খালাসি সেই সুযোগ পাননি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটির চালক রফিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বেডে শুয়েই তিনি বলেন, ‘আমি ৬০-৭০ কিলোমিটার গতিতে বাস চালাচ্ছিলাম। ট্রাকটির গতি ছিল অনেক বেশি। ট্রাকটি বাসকে ধাক্কা মারে। আর কিছু মনে নেই।’ তবে তিনি বলেন, ‘উল্টোদিকে ট্রাকটিকে দেখে বাসটিকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম।’ বাসের খালাসি মহম্মদ সাদিক বলেন, ‘ট্রাকটি সরাসরি বাসের ডিজেল ট্যাঙ্কে ধাক্কা দেয়। আমি তখন বাসের সামনের সিটে বসে ঘুমোাচ্ছিলাম। ধাক্কার পরেই জানলার বাসের কাচ ভেঙে বাইরে ছিটকে পড়ে যাই।’
তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে একটি স্কুলবাস। দুর্ঘটনার সময় একই লেন দিয়ে ৪৫ জন স্কুলপড়ুয়া নিয়ে দশরহাল্লি থেকে ডান্ডেলি যাচ্ছিল বাসটি। সামনে বাসটিতে আগুন দেখে দ্রুত স্কুলবাসটিকে অন্য লেনে সরিয়ে নিয়ে যান চালক।