সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দাবি, হঠাৎ ধর্মঘটে ডেলিভারি কর্মীরা
বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: চাই সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। বৃহস্পতিবার, বড়দিনে আচমকাই দেশজুড়ে ধর্মঘটে শামিল হলেন অনলাইন ডেলিভারি সংস্থার কর্মচারীরা (‘গিগ’ কর্মী)। ফলে দিনভর চরম বিপাকে পড়তে হল আম জনতাকে। অনলাইন ডেলিভারি সংস্থার কর্মীদের ধর্মঘটের জেরে এদিন বাতিল হয় গ্রাহকদের বিভিন্ন অর্ডার। বহু ক্ষেত্রেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসে পৌঁছয়নি কাঙ্খিত সামগ্রী। সন্ধ্যার পর ধর্মঘট ওঠায় অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
‘গিগ’ কর্মীদের এহেন ধর্মঘটের জেরে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে কেন্দ্রের মোদি সরকার। কারণ শ্রম কোড আইন কার্যকরের পরেই কেন্দ্র বারবার দাবি করেছে, এর ফলে ‘গিগ’ বা অনলাইন ডেলিভারি সংস্থার কর্মীদের আর কোনও অসন্তোষ থাকবে না। তাঁদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের দাবি উড়িয়ে দিয়ে যেভাবে এদিন কাজ বন্ধ রেখেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরা, তাতে রীতিমতো চাপে গেরুয়া শিবির। এই বিষয়কে অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল। কারণ বৃহস্পতিবারই মোদি সরকারকে সাতদিনের সময়সীমা দিয়েছেন আন্দোলনরত ‘গিগ’ কর্মীরা। দাবি পূরণ না হলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ফের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, বর্ষশেষেও সাধারণ মানুষের জন্য ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছেই।
আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রতি কাজের ভিত্তিতে পেমেন্ট নয়। বরং নির্দিষ্ট বেতন দিতে হবে তাঁদের। সেখানে ন্যূনতম মজুরি থাকতে হবে। পান থেকে চুন খসলেই আইডি ব্লক করে দেওয়া হয় বলে ‘গিগ’ কর্মীদের অভিযোগ। এর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি ‘গিগ’ কর্মীদের বিমা এবং দুর্ঘটনায় যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলেও দাবি করা হয়েছে। যে ‘টেন মিনিটস ডেলিভারি’র টার্গেট তাঁদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, সেই লক্ষ্যমাত্রা পালন করতে গিয়ে অনেক সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় ডেলিভারি কর্মীদের। সামাজিক সুরক্ষা পরিষেবার আওতায় এনে তাঁদের কাজের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবিও তুলেছেন ‘গিগ’ কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, অনলাইন ডেলিভারি সংস্থার কর্মীদের এহেন দশ মিনিটে পণ্য সামগ্রী গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংসদে সরব হয়েছে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল। যদিও কেন্দ্র তাতে কর্ণপাত করেনি বলেই অভিযোগ। রাজ্যের আপত্তি উড়িয়ে গত ২১ নভেম্বর থেকে সারা দেশে শ্রম কোড আইন কার্যকর করেছে মোদি সরকার। সেখানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিকে তার বার্ষিক টার্নওভারের দু’শতাংশ সামাজিক সুরক্ষা তহবিলে কন্ট্রিবিউট করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ‘গিগ’ কর্মীদের পেমেন্ট দিতে মোট যা খরচ হয়, তার সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ কন্ট্রিবিউশনের কথাও বলা হয়েছে। প্রতীকী চিত্র