নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে পালিত হল বড়দিন। খ্রিস্টানদের পাশাপাশি উৎসবে সামিল হল অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গাতেই হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনার খবর মিলেছে। কেরল থেকে অসম- দেশের একাধিক রাজ্যে এধরনের ঘটনায় ম্লান হল বড়দিন উদযাপনের আনন্দ। সবচেয়ে বড় উৎসবেও খ্রিস্টানদের সঙ্গী হয়ে রইল উদ্বেগ আর আশঙ্কা। বুধবার সন্ধেয় অসমের নলবাড়ি জেলার পানলগাঁওয়ের সেন্ট মেরি ইংলিশ স্কুলে ঢুকে পড়ে একদল যুবক। নিজেদের বজরং দলের সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে বড়দিনের যাবতীয় সাজ-সরঞ্জাম তারা পুড়িয়ে দেয় তারা। দেওয়া হয় ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘জয় হিন্দুরাষ্ট্র স্লোগান’। অসমের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও একই রকমের তাণ্ডবের খবর এসেছে।
হেনস্তার অভিযোগ কেরালাতেও। রবিবার পালাক্কাডে শিশুদের ক্যারোল গ্রুপের উপর হামলা ও বাদ্যযন্ত্র ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সি কৃষ্ণকুমারের সাফাই, ওই গ্রুপের সদস্যরা মদ্যপান করছিলেন। সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে অভিভাবকরা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের বয়স ১০ থেকে ১৫। মধ্যপ্রদেশেও এধরনের হামলা, হুমকির খবর মিলেছে।
দিল্লির লাজপতনগর মার্কেটের সান্তা টুপি পরা নারী-পুরুষদের হেনস্তা করা হয়। এখানেও হামলাকারী নিজেকে বজরং দলের সদস্য বলে দাবি করে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে এক পাদ্রী ও তার স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ২২ ডিসেম্বর প্রার্থনা বানচাল করার সময় ওই যুবকের মুখে শোনা যায় ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান। বেরিলিতে একটি চার্চের বাইরে হনুমান চালিশা পাঠ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্বহিন্দু পরিষদের সদস্যদের। হরিয়ানাতেও ১৬০ বছরের পুরনো সেন্ট থমাস চার্চের বাইরে হনুমান চালিশা পাঠের আয়োজন করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
খ্রিস্টানদের নিগ্রহের অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে ছত্তিশগড়। একাধিক গ্রামে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের শেষকৃত্যে বাধা দেওয়া ও ধর্ম পরিবর্তন করানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবারও বড়দিনের আগের দিন রাজ্যজুড়ে শাটডাউনের ঘোষণা করেছিল ছত্তিশগড়ের সর্বহিন্দু সমাজ। রায়পুরের একটি মল বড়দিন উপলক্ষ্যে সাজানো হয়েছিল। সেখানেও ভাঙচুর চালায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এদিকে বড়দিনে স্কুলের ছুটি বাতিল করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। স্কুলে অনুষ্ঠিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল শিশুদের।