অন্য পানীয়ের সঙ্গে চায়ের নাম জুড়ে বিক্রি করলেই কড়া ব্যবস্থা, হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের, ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা-জেল
বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস। চেনা কথায় চা গাছ। আর সেই গাছ ব্যতীত অন্য কোনও গাছের পাতা বা গুল্মলতার থেকে পানীয় তৈরি করলেও তাকে কোনওভাবেই চা বলে বিক্রি করা যাবে না। তা আদতে লোক ঠকানো। এমনটাই স্পষ্ট জানিয়ে দিল ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি (ফাসাই)। তাই ‘হার্বাল টি’, ‘রোজ টি’, ‘ফ্লাওয়ার টি’, ‘রুইবোস টি’র মতো নানা নামে বাজারে যে চা শরীরের পক্ষে উপকারী বলে বিক্রি হয়, সেগুলিকে কোনওভাবেই ‘চা’ বলা যাবে না। অন্যথায় ধরা পড়লে হবে শাস্তি। ১০ লক্ষ পর্যন্ত আর্থিক জরিমানার সঙ্গে কারাদণ্ডও হতে পারে। বাতিল হতে পারে বিক্রেতার লাইসেন্সও।
লেবেলিংয়ের ক্ষেত্রেও অনেক সময় ভুয়ো বিষয় নজরে এসেছে কেন্দ্রের। দার্জিলিংয়ের চা জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পেয়েছে। অর্থাৎ সেটি অন্যত্র কোথাও হতে পারে না। কেউ অন্য কোনও চা-কে ‘দার্জিলিং’ বলে চালাতেও পারে না। অথচ অনেক সময়ই নেপালের চা ‘দার্জিলিং’ বলে বাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সংসদের বাণিজ্য সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন তৃণমূলের দোলা সেন সরকারের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন। তাই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
শীতের এই মরশুম তো বটেই, স্বাস্থ্য সচেতনতার নামে আজকাল বাজারে নানাবিধ চা বিক্রি হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বলে উল্লেখ থাকে। অনেক নামিদামী সংস্থাও তা বিক্রি করে। কিন্তু এটা আদতে বিভ্রান্তকর বলেই ফাসাইয়ের মন্তব্য। কারণ, সেগুলি নিখাদ চা নয়। চা একমাত্র হয় ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস থেকেই। তাই অন্য কোনও গাছের অংশ থেকে পানীয় চায়ের মতো দেখতে হলেও সেটিকে কোনওমতেই চা আখ্যা দেওয়া যাবে না। বিশুদ্ধ চা পাতা বা গুঁড়ো ফুটিয়েই যে পানীয় তৈরি হয়, সেটিই আসলে চা। বাকিগুলি নয়। তাই বিভ্রান্তকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে কোম্পানিগুলিকে যেমন সতর্ক করা হয়েছে, একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সহ সব রাজ্যকেই বলা হয়েছে এনিয়ে নজরদারি বাড়াতে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মেও যদি চা বলে অন্য কোনও পানীয় বিক্রি হয়, তাহলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ফাসাই।
অন্যদিকে, ইউপিএসসির সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় তাদের প্রতিষ্ঠানে পড়ে সফল হয়েছে বলে বিভ্রান্তকর বিজ্ঞাপন দেওয়ায় অজয় ভিশন এডুকেশন প্রাইভেট লিমিটেডের ‘ভিশন আইএএস’র বিরুদ্ধে ১১ লক্ষ টাকা জরিমানা করল কেন্দ্র। ২০২২ এবং ২০২৩ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় তাদের কোচিং ক্লাসে পড়ে প্রভূত সাফল্য পেয়েছে বলেই প্রতিষ্ঠানটি প্রচার করেছিল। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি (সিসিপিএ) হাতেনাতে ধরেছে, বিজ্ঞাপনের দাবি সত্য নয়। তাই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।