সংবাদদাতা, মালদহ: কনকনে ঠান্ডা। হাড় কাঁপানো উত্তুরে হাওয়ায় কার্যত জবুথবু মালদহবাসী। কিন্তু এমন কনকনে আবহাওয়াতেও আগুন মাছ-মাংসের বাজার। পৌষ মাসে বিয়ের নির্ঘণ্ট না থাকলেও পিকনিকের ধুম লাগে। শীত উপভোগ করতে বছরের শেষ সপ্তাহে অনেকেই ছুটছেন এদিক ওদিক। যাঁরা আলস্য কাটিয়ে বাইরে যেতে চাইছেন না, পাড়ার ক্লাব কিংবা বাড়ির ছাদেই বসাচ্ছেন খাওয়াদাওয়ার আসর। আর তাতেই একলাফে চাহিদা বেড়ে গিয়েছে মাছ-মাংসের। সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী দামও। বিশেষ করে প্রমাণ সাইজের গঙ্গার মাছ কিংবা পাঁঠা ও খাসির মাংস কিনতে গেলে হাতে না হোক, পকেটে ছ্যাঁকা লাগবেই।
বৃহস্পতিবার ছিল বড়দিন। সকাল থেকেই উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে অনেকেই ছুটেছেন কাছেপিঠে পিকনিক করতে। সব ব্যবস্থাপনা সেরে শেষ মুহূর্তে বাজারে গিয়ে মাছ-মাংস কিনতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া হয়েছে অনেকের।
গঙ্গা থেকে ধরা ৭ থেকে ১০ কেজি ওজনের রুই-কাতলা বিক্রি হয়েছে হাজার থেকে বারোশো টাকা দরে। গলদা চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি কৈ মাছ সাইজ ভেদে ৮০০ থেকে হাজার টাকা দরে বিকিয়েছে। শীতের ইলিশ খুব একটা সুস্বাদু না হলেও দাম কমেনি। কড়কড়ে দু’টি ৫০০ টাকার নোট পকেট থেকে বের করলে তবেই মিলেছে ৭৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। কিছুটা কম দামে অনেকে তাই কিনে নিয়ে গিয়েছেন আড় মাছ অথবা পুকুর থেকে ধরা রুই, কাতলা।
ইংলিশবাজারের বঙ্কিমচন্দ্র পুরবাজারের মাছ বিক্রেতা জ্যোতিন্দ্র হালদার বললেন, পিকনিকের মরসুম চলছে। দাম একটু বাড়তির দিকেই রয়েছে। আরেক মাছ বিক্রেতা সঞ্জয় হালদারের বক্তব্য, শীতকালে নদীর বড় মাপের রুই, কাতলা কম পাওয়া যায়। যদিও বা মেলে, তার দাম থাকে বেশ চড়া।
পিকনিকে যাবেন বলে এদিন বন্ধুদের নিয়ে বাজারে এসেছিলেন সুকান্ত রায়। তাঁর মন্তব্য, গঙ্গার টাটকা মাছ কিনতে গিয়ে দাম শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। সকলের সঙ্গে পরামর্শ করে শে, পর্যন্ত মাছ কিনেছি। কারণ দাম সকলে মিলে দিলেও কিছুটা ধাক্কা তো লাগছেই। একার পক্ষে এখন এই মাছ কেনা সত্যিই কঠিন। খাসি বা পাঁঠার মাংস বিকোচ্ছে প্রায় ৮০০ টাকা দরে। প্রকৃত দেশি মুরগির মাংস কিনতে গেলে খরচ হচ্ছে কেজি প্রতি প্রায় ৬৫০ টাকা।
তবে, পিকনিকের মরশুমে দাম নিয়ে মাথা ঘামাতে খুব একটা রাজি নন উৎসবে মজে থাকা মালদহবাসী। নিজস্ব চিত্র