• ১৩টি দেশের সমন্বয়ে সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা, আজ রাজবাড়িতে ঢাকার প্রতিনিধি
    বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ, শুক্রবার ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িতে আন্তর্জাতিক সেমিনার উপলক্ষ্যে ভারত, বাংলাদেশ সহ ১৩টি দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে ভারত বিরোধী স্লোগান ও দূতাবাসে হামলার পরও সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিচ্ছে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। সকাল ১০টা নাগাদ রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে একসঙ্গে ১৩টি দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন হবে। সংশ্লিষ্ট সবক’টি দেশ থেকেই অধ্যাপক, গবেষক, বৌদ্ধ ধর্মগুরু ও কূটনীতিকরা এই সেমিনারে অংশ নেবেন। ২৬ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে এই সেমিনার চলবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা আসতে শুরু করেছেন।

    বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে জোরকদমে প্রস্তুতি চলছিল। পতাকা তোলার জায়গাটি আলপনা দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, জাপান, সাউথ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার ও ভুটান থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন। তাঁরা নিজ নিজ দেশের পতাকা পতাকা উত্তোলন করবেন। সেইসঙ্গে তিনদিনের সেমিনারে অংশ নেবেন। এই সেমিনারের আয়োজকদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের অধীনে পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ এবং বাংলাদেশের বুদ্ধিস্ট হিস্ট্রি কালচার হেরিটেজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশের ওই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে দু’জনের আসার কথা। বৃহস্পতিবার তাঁদের একজন এসে পৌঁছে গিয়েছেন। অন্যজন আসতে পারবেন না বলে জানা গিয়েছে। 

    গত কয়েক বছর ধরেই তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের সদস্য তথা তমলুক পুরসভার সদ্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়ের উদ্যোগে এই সেমিনার হচ্ছে। প্রাচীন তাম্রলিপ্ত নগরের সঙ্গে জলপথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল। বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ইতিহাসকে তুলে ধরতে এবং তথ্য তলাশের লক্ষ্যে দীপেন্দ্রনারায়ণবাবুর এই উদ্যোগ।

    সম্প্রতি বাংলাদেশে ওসমান হাদি হত্যা ও তার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু দীপুচন্দ্র দাসের নির্মম হত্যায় দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। যে কারণে দুই দেশই বেশকিছু ভিসা কেন্দ্র বন্ধ রেখেছে। এরকম পরিস্থিতিতে সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে বাংলাদেশের পতাকাও উত্তোলিত হবে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িতে। পাশাপাশি রাজবাড়ির শ্রীশ্রী রাধামাধব জীউ মন্দিরের সামনে সেমিনারের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। সেই আলোচনায় দর্শক হিসেবে নানা পেশার মানুষ উপস্থিত হবেন। সেমিনারের প্রধান উদ্যোক্তা রাজ পরিবারের সদস্য দীপেন্দ্রনারায়ণবাবু বলেন, প্রাচীন তাম্রলিপ্ত নগরের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক সহ নানা দিকের সম্পর্ক নিয়ে আমাদের এই সেমিনার হবে। ১৩টি দেশ থেকে প্রায় ১৫জন প্রতিনিধি হাজির হবেন। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। তারমধ্যে বাংলাদেশও আছে। আমরা চাই, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আগের মতো মজবুত হোক। সংঘাত নয়, সৌভ্রাতৃত্বের জয় হোক। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)