• হাজারদুয়ারি ও মোতিঝিলে জনজোয়ার
    বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, লালবাগ: বড়দিনে জাঁকিয়া বসা শীতের সকালে মুর্শিদাবাদের দর্শনীয় স্থানগুলিতে উপচে পড়া ভিড়। হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম, মোতিঝিল, কাটরা মসজিদ, কাঠগোলাপ বাগান সহ বিভিন্ন জায়গায় দিনভর পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিন বেলা গড়াতেই পর্যটকদের সংখ্যাও  বাড়তে থাকে। বিকেলের দিকে হাজারদুয়ারির টিকিট কাউন্টার থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে প্যালেস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, বেলা তিনটের পর থেকে মোতিঝিল বা প্রকৃতিতীর্থে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত  দুই লক্ষাধিক টাকার টিকিট বিক্রি হয়। সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত টাকার অঙ্ক অনেকটাই বাড়বে বলে মোতিঝিল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর। মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, প্রতি বছরের মতো বড়দিনে পর্যটকরা মুর্শিদাবাদে ঘুরতে এসেছেন। তবে গত বছর ভিড় আরও বেশি ছিল। আশা করছি, ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি এদিনের ঘাটতি পুষিয়ে যাবে। 

    বড়দিনে পর্যটকদের উপস্থিতি সংখ্যার বিচারে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না নশিপুরের কাঠগোলা বাগান ও প্রসাদ। নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ নির্মিত কাটরা মসজিদের মতো স্থানগুলি। বড়দিন উপলক্ষ্যে মুর্শিদাবাদ শহর ও শহর সংলগ্ন একাধিক পার্ক ও ভাগীরথীর পাড়ে বহু মানুষ জমিয়ে পিকনিক করেন এদিন। সবমিলিয়ে বড়দিনে নবাবের শহরের সবর্ত্র উৎসবের মেজাজ লক্ষ্য করা গিয়েছে। পাশাপাশি বড়দিনে কোনওপ্রকার অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। বড়দিন নিরাশ করেনি নবাবের শহরে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশার মানুষকে। দিনের আলো ফুটতেই বাস, ছোটো গাড়ির পাশাপাশি শিয়ালদহ-লালগোলা এবং হাওড়া-আজিমগঞ্জ শাখার ট্রেনে চেপে পর্যটকরা লালবাগ যেতে শুরু করেন। পর্যটকরা এদিন সকালের দিকে কাটরা মসজিদ, কাঠগোলা বাগান সহ দর্শনীয় স্থানগুলি দেখার পরেই হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের গেটের সামনে ভিড় করেন। 

    স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গাইডরা জানান, মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা পর্যটকরা প্রথমে কাঠগোলা বাগান ও প্রাসাদ, ১১০০ কবর, তোপখানা, কাটরা মসজিদ, নশিপুর রাজবাড়ি ঘুরে দেখেন। তারপরে দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর্ব সেরে দ্বিতীয়ার্ধে হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম ও মোতিঝিলে ঘুরে যান। হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের এক কর্মী বলেন, টিকিট কাউন্টার খোলা থেকে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত পর্যটকদের লম্বা লাইন ছিল। 

    বুধবার কলকাতা থেকে পরিবার নিয়ে মুর্শিদাবাদে এসেছেন ব্যাঙ্ককর্মী তিলক মজুমদার। তিনি বলেন, কর্মসূত্রে এলাহাবাদে রয়েছি। ইচ্ছা থাকলেও এতদিন আসা হয়নি। এবছর ছুটিতে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। 

    পেশায় গাইড পোখরাজ শেখ বলেন, বড়দিনে পর্যটকদের ভালোই ভিড় ছিল। তবে গত বছর সংখ্যাটা আরও বেশি ছিল। নিজামত কেল্লার এক হোটেল ব্যবসায়ীর কথায়, গত বুধবার থেকে খদ্দেরের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)