হাতিপালের হানা, বড়দিনেও ভয়ে ঘরবন্দি বহু গ্রামের মানুষ, শুরু ড্রোন-নজরদারি
বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: বড়দিনের আনন্দে গোটা রাজ্যের মানুষ মেতে উঠেছে। সন্ধ্যা নামতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মেলায় ভিড় উপচে পড়ছে। কিন্তু উৎসবের আবহে হাতির আতঙ্কে একাধিক গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। সন্ধ্যার পর বহু গ্রামের মানুষ বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। আতঙ্কে তাঁদের ঘরবন্দি অবস্থায় রাত কাটাতে হচ্ছে। জানা গিয়েছে, শুধু মেদিনীপুর ডিভিশন এলাকায় ৬০টির বেশি হাতি রয়েছে। বিভিন্ন জঙ্গলে হাতি ছড়িয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ সেখানে যেতে পারছে না। তবে, উৎসবের দিনে জঙ্গললাগোয়া এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, মেলা কিংবা বিভিন্ন চার্চে গেলে রাতের অন্ধকারে জঙ্গলের পাশ দিয়েই ফিরতে হবে। বড়দিনের রাতে হাতির ভয়ে অনেকেই তাই বাড়িতে কাটিয়েছেন। তবে, সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন চাষিরা। কারণ, হাতির দল হানা দিয়ে জমিতে থাকা শীতকালীন সবজি নষ্ট করতে পারে।
মেদিনীপুর ডিভিশনের ডিএফও দীপক এম বলেন, বনদপ্তর সজাগ রয়েছে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি চলছে।
প্রসঙ্গত, কৃষি প্রধান জেলাগুলির মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর অন্যতম। এই জেলায় কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে শুধু ধান ও আলুর চাষ হয়। ফসল ফলিয়ে গ্রামবাসীরা উপার্জন করেন। তাছাড়া, বহু মানুষ জঙ্গল থেকে কাঠ, মধু, বিভিন্ন ধরনের ফল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে। কিন্তু তাতেই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে হাতির দল। গ্রামবাসীদের কথায়, বাম আমলে মাওবাদী আন্দোলনের জেরে গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়েছিল। সেই সময় কার্যত গুলির শব্দে সকলের ঘুম ভাঙত। এমনকি, তাঁরা সরকারি প্রকল্পের সুবিধাটুকুও পেতেন না। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু এখন হাতির আতঙ্কে ঘুম উবেছে। চাঁদড়া এলাকার বাসিন্দা চন্দন দাস বলেন, সারা বছর ধরেই হাতির দল রয়েছে। দুর্গাপুজোয় রাতে অনেকে হাতির ভয়ে ঠাকুর দেখতে যেতে পারেননি। বড়দিনেও রাতে অনেকেই মেলায় ঘুরতে যেতে পারেননি। হাতি একবার আক্রমণ করলে মৃত্যু অনিবার্য। এক আধিকারিক বলেন, মেদিনীপুর বনবিভাগ এলাকায় ৬০টির বেশি হাতি রয়েছে। এছাড়া, রূপনারায়ণ বনবিভাগ এলাকায় ১৪টি হাতিকে দেখা গিয়েছে। চাঁদড়া, চাউলপুরা, আমগোবরা, আমাঝরনা, শুকনাখালি, ভাদুতলা, কারামারাশোল, আরাবাড়ি, ভাঙাবাঁধ, টুংনী, নয়াবসত, হুমগড় এলাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন।-নিজস্ব চিত্র