• ফর্ম যথাযথ পূরণ হয়নি, জমা পড়েনি নথিও! শুনানিতে প্রথমেই ডাক সেই ভোটারদের
    বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী কাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে এসআইআরের শুনানি পর্ব। ইতিমধ্যেই ‘সন্দেহজনক’ কিংবা ২০০২ সালের তালিকায় নিজের ও আত্মীয়ের নাম না থাকা ভোটারদের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করেছেন বিএলওরা। সে সব অ্যাপ মারফত আপলোডও করা হয়ে গিয়েছে। পাঁচদিনের মধ্যে সেই সব নথি খতিয়ে দেখার কাজ শেষ করতে হবে ইআরওদের। আগামী মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে সেই সময়সীমা। শুনানি অবশ্য শুরু হয়ে যাবে তার আগেই। জানা যাচ্ছে, যে সমস্ত ভোটার বিএলও মারফত নথি জমা দেননি, শুনানি পর্বের প্রথম দিকে ডেকে পাঠানো হবে তাঁদের। এমনকী ইনিউমারেশন ফর্ম যাঁরা যথাযথভাবে পূরণ করেননি, তাঁরা হিয়ারিংয়ে ডাক পাবেন প্রথমেই।

    ২০০২ সালের তালিকায় নিজের বা কোনও আত্মীয়ের নাম নেই, এমন ভোটারদের শুনানির সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের চোখে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে চিহ্নিত ভোটারদেরও ডাকার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও শেষপর্যন্ত তাঁদের তলব করা হবে কি না, সেব্যাপারে ধন্দ রয়েছে। কারণ,  ‘সন্দেহজনক’ ভোটারদের তালিকা আগেই পাঠানো হয়েছে বিএলওদের কাছে। এবং বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছ থেকে উপযুক্ত নথি নিয়ে নাম-পদবির গরমিলের মতো সমস্যা বিএলও স্তরে মিটিয়ে ফেলতে হবে। দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে তাঁদের শুনানিতে ডাকা নাও হতে পারে বলে খবর। 

    ইতিমধ্যেই ভোটারদের তরফে জমা পড়া নথি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন ইআরওরা। যে সমস্ত নথি জমা পড়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছেন ইআরওরা। জানা যাচ্ছে, তাঁদের পাশাপাশি সেই সমস্ত নথি খতিয়ে দেখবেন মাইক্রো অবজার্ভাররাও। অর্থাৎ, নথিগুলি দু’বার যাচাই করা হবে। কমিশনের এক কর্তার কথায়, কোনও অযোগ্য ভোটার যাতে তালিকাভুক্ত না হন, তা যে কোনও মূল্যে নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি কোন বৈধ ভোটার যাতে তালিকা থেকে বাদ না পারেন তাও সুনিশ্চিত করতে হবে। সেই কারণেই এহেন পদক্ষেপ। 

    এছাড়াও শুনানিতে কী কী করণীয়, সেব্যাপারে মাইক্রো অবজার্ভারদের ন’দফা নির্দেশিকা দিয়েছে কমিশন। জানানো হয়েছে, অ্যাপ মারফত বিএলওদের জমা দেওয়া ‘ডিজিটাইজড’ ইনিউমারেশন ফর্মের তথ্য যাচাই করে দেখতে হবে। সেইসঙ্গে জন্ম-মৃত্যু এবং অন্য তথ্যের সঙ্গে ভোটার তালিকা যাচাই করা জরুরি। এছাড়াও ভোটারদের জমা দেওয়া নথি পরীক্ষা করে দেখতে হবে মাইক্রো অবজার্ভারদের। দাবি অনুযায়ী জমা পড়া নথির সামঞ্জস্য রয়েছে কি না, সেটাও যাচাই করা দরকার। শুনানি পর্বের সার্বিক প্রক্রিয়ার উপর নজরদারিও চালাতে হবে। ভোটার তালিকা তৈরি বা সংশোধনের সময়ে কোথাও কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে যাচ্ছে কি না, সেদিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে মাইক্রো অবজার্ভারদের। পর্যবেক্ষক এবং বিশেষ পর্যবেক্ষকদের পরিসংখ্যানগত তথ্য বিশ্লেষণে প্রয়োজন মতো সাহায্য করাও তাঁদের দায়িত্ব। এমনকী মাইক্রো অবজার্ভারদের বলা হয়েছে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক (সিইও), পর্যবেক্ষক বা বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা প্রয়োজন অনুসারে কোনও নির্দেশ দিলে, তা পালন করতে হবে। শুনানি প্রক্রিয়ায় নজরদারির পর কী তথ্য উঠে আসছে তা সিইও, পর্যবেক্ষক বা বিশেষ পর্যবেক্ষকের কাছে রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে। বুধবারই প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মাইক্রো অবজার্ভারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ন’দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ডাক পাওয়া ভোটারের নাম চূড়ান্ত তালিকায় উঠবে কি না, তা অনেকাংশে নির্ভর করবে শুনানি পর্বের উপর। ফলে এই ন’দফা নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে মাইক্রো অবজার্ভারদের।
  • Link to this news (বর্তমান)