নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: উত্তরবঙ্গের পর এবার দক্ষিণবঙ্গ। ক’দিন আগেই জলপাইগুড়ির আকাশে রহস্যজনক আলোকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে একটি সবুজ পাথর উদ্ধার হওয়ায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। এবার সুন্দরবনের এক প্রান্তে চাষের জমির নীচে থেকে অদ্ভুত আওয়াজ উঠে আসায় নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীদের কৌতূহল। বুধবার কাকদ্বীপে ওই জমির নীচে থেকে এক অদ্ভুত ধরনের আওয়াজ পান এক কৃষক। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনলে তাঁরাও শুনতে পান ওই শব্দ। যেন মাটির গভীর থেকে উঠে আসছে সেই ‘গুম গুম’ আওয়াজ। তবে পরের দিন আর ওই শব্দ শোনা যায়নি।
তাহলে কি এবার সুন্দরবনে তেল বা প্রাকৃতিক গ্যাসের কোনও উৎস মিলতে চলেছে? বাসিন্দাদের মধ্যে এনিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। উত্তরবঙ্গের পর এবার দক্ষিণে পরপর এমন ঘটনা ঘটলেও কোনও রহস্যই উন্মোচিত হয়নি। তাই বিজ্ঞানের ভাষায় এগুলি কী, সেটাই এখন জানতে চাইছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপের সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চন্দ্রনগর মৌজার পলতাপাড়া এলাকায় মনিরুল মোল্লার ধানের জমি রয়েছে। বুধবার বিকেলে ওই জমিতে স্থানীয় এক বাসিন্দা গোরু বাঁধতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি মাটির তলা থেকে ওই শব্দ শুনতে পান। জমিতে কান পাতলে আওয়াজের তীব্রতা বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি গ্রামবাসীদের জানান। তাঁরাও চলে আসেন জমিতে। সবাই একে একে কান পাতেন মাটিতে। অভিজ্ঞতা সবারই এক। কয়েকজন কৌতূহলি তো কোদাল-শাবল দিয়ে জমি খুঁড়তেও শুরু করেন। কিন্তু কিছুই মেলেনি। তবে শব্দের কোনও বদল ঘটেনি। এরপর গ্রামবাসীরা হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানা ও প্রশাসনকে বিষয়টি জানান।
কিন্তু হঠাৎ কেন ওই জায়গায় এমন অদ্ভুত শব্দ, যা পরেরদিন আর পাওয়া গেল না? কাকদ্বীপ বা সুন্দরবনের ওই এলাকার কোথাও এমন শব্দ শোনা যায়নি বলেই জানা গিয়েছে। বাসিন্দারা জানান, এখানে যদি তেল বা গ্যাসের উৎস পাওয়া যায়, তাহলে তো সুন্দরবনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। তারা একটি দল পাঠিয়ে জায়গাটি পরিদর্শন করবে বলে ঠিক করেছে। এনিয়ে কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক প্রীতম সাহার বক্তব্য, ‘একটা রিপোর্ট তৈরি করে ছবি সহ বিষয়টি জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরাঙ্গ পুরকাইত বলেন, ‘জমির ওই অংশ লাল ফিতে দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করেছেন।’