পার্ক স্ট্রিটের সান্তাই আজ হবেন চার্লি, উপহার শুধু ‘হাসি’ই
বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পার্ক স্ট্রিটের মোড়েই দাঁড়িয়ে আছেন সান্তা ক্লজ। দূর থেকে মনে হয় অবিকল ছবিতে দেখা সেই মিষ্টি বুড়ো। শুধু বলগা হরিণটিই যা সঙ্গে নেই। সাদা দাড়ি রয়েছে, কাঁধে লাল ঝোলাও আছে। হাতে একখানা ঘণ্টাও আছে। কিন্তু এই সান্তা বুড়োর ঝোলায় উপহার নেই। রয়েছে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় পরে আসা জামাকাপড়। খুদে থেকে বড়, সকলে তাঁকে দেখে কাছে আসছেন। ছবি তুলছেন। হ্যান্ডশেক করে কেউ কিছু টাকা দিচ্ছেন। তাতে কিছু রোজগার হচ্ছে। এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা দেবা বহড়ুর জীবন কাটে এভাবেই। আজ, শুক্রবার তিনি চার্লি চ্যাপলিন সেজে আসবেন।
দেবা বলেন, ‘একসময় এই কাজই নিয়মিত করতাম। ১৪ বছর হল এই কাজের কদর তেমন নেই। এখন বিভিন্ন সাজে মেলাগুলিতে যাই। চলচ্চিত্র উত্সবেও গিয়েছিলাম। আমি একা মানুষ। যা রোজগার হয় তাতে মোটামুটি চলে যায়।’ পার্ক স্ট্রিটে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে দেবা ঘণ্টা বাজাচ্ছেন। শিশুরা তাঁকে অবাক চোখে দেখছে। ছবির সান্তা বুড়ো খুদেদের চোখের সামনে উঠে এসেছে। ঝোলায় কি উপহার রয়েছে? শিশুদের তা নিয়ে কৌতূহল। দেবা বললেন, ‘না না। বাড়ি থেকে যে জামাকাপড় পরে বের হই। সেই জামাকাপড়ই এখানে রয়েছে। রাস্তাতেই কোথাও বদলে নিই।’ তিনি যেখানে সান্তা সেজে দাঁড়িয়ে সেখানে তাঁর সামনে বিক্রি হচ্ছে ধর্মগ্রন্থ গীতা। তার ঠিক উল্টো ফুটপাতে বসেছে বাম ছাত্র-যুবদের বুক স্টল। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মূলত বামপন্থা সংক্রান্ত বইপত্র। তা উদ্বোধন করেছেন বিমান বসু। রয়েছে বাংলাদেশ ও প্যালেস্টাইনের সংহতিতে বার্তাও। এসবের মাঝখান দিয়ে সাধারণ মানুষের ঢল বয়ে গিয়েছে দিনভর। আর ধর্ম-বামপন্থা-কেক-ঝলমলে পোশাকের মাঝখানে সান্তা হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন দেবা। তার ঝুলিতে উপহার নেই। বরঞ্চ কেউ দু-দশ টাকা দিলে তা উপহার হিসেবেই গ্রহণ করেছেন। বড়দিনের পার্ক স্ট্রিট জানে, সান্তারও খিদে মেটাতে টাকা লাগে।